সমাবর্তনে ব্রাত্য রাজ্যপাল, একাই অনুষ্ঠান মাতালেন অধ্যক্ষ

সমাবর্তনে ব্রাত্য রাজ্যপাল, একাই অনুষ্ঠান মাতালেন অধ্যক্ষ

কোচবিহার: শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপালকে ছাড়াই তৃতীয় বার্ষিক সমাবর্তন উৎসব অনুষ্ঠিত হল কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুক্রবার কোচবিহার উৎসব অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেব কুমার মুখ্যোপাধ্যায়। এই অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯ জন পড়ুয়াকে স্বর্ণ পদক ও ৪৪ জন পড়ুয়াকে রৌপ্য পদক দিয়ে সম্মানিত করা হয়। যদিও এবছর এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোন ডিলিট সম্মান দেওয়া হয়নি।  তবে পঞ্চানন বর্মা স্মৃতি পুরষ্কার দেওয়া হয়েছে বিশিষ্ট আইনজীবী তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ প্রসেনজিৎ বর্মনকে।    

এদিনের এই অনুষ্ঠানে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় উপস্থিত হতে পারেননি। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের তিন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, বিনয় কৃষ্ণ বর্মন ও গৌতম দেব। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শিবাজী রাহা। সমাবর্তন উৎসব নিয়ে প্রথম থেকে রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যে সঙ্গে সংঘাত বাধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। এবিষয়ে তাকে কিছু জানান হয়নি এই অভিযোগ এনে রাজ্যের রাজ্যপাল জগদীশ ধনখড় দুটি টুইট করেন। দ্বিতীয় টুইটে তিনি জানিয়েছেন, কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেব কুমার মুখোপাধ্যায়কে অপসারণের বিষয়টি বিবেচনার জন্য প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজভবনের তরফ থেকে মেইল, ফ্যাক্স ও পোস্টের মাধ্যমে একটি নোটিশ উপাচার্যের কাছে পাঠানো হয় বলে জানা গিয়েছে। পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ৯(৭) ধারা উল্লেখ করে ১৪ দিনের মধ্যে উপাচার্যকে এই শোকজের উত্তর দিতে হবে। উত্তর দেওয়ার জন্য উপাচার্য রাজভবনে ডেকেছেন রাজ্যপাল। পাশাপাশি শোকজের উত্তর ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যা যা হবে বা হচ্ছে, তার সমস্ত তথ্য উপাচার্যকে দিতে হবে রাজভবনে। এমনই নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল।

এদিন আচার্যের অনুপস্থিতিতে উপাচার্য দেব কুমার মুখোপাধ্যায় নিজেই সমস্ত দায়িত্ব ভার সামলান। শুক্রবার তিনি বলেন, “আমাকে আইন মেনে কাজ করতে হবে। বিধি মেনে কাজ করছি, কোন ভুল পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করিনি। তবে আচার্য কেন চিঠি পেলেন না সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে। আমরা সঠিক সময়েই বিধি মেনে তার অনুমতির জন্য চিঠি পাঠিয়েছিলাম।” রাজ্যপাল তথা আচার্যের শোকজ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,“বিধি মেনে কোন চিঠি এলে তার উত্তর আমি অবশ্যই দেব। সোশ্যাল মিডিয়ায় কি হয়েছে তার উত্তর আমি দেব না।”

রাজ্যপাল বনাম রাজ্যের সংঘাত এরাজ্যে নতুন কোন ঘটনা নয়। ইদানিং রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় গুলি নিয়ে এই সংঘাত নতুন মাত্রা পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে রাজ্যপালের ক্ষমতা খরগ করতে ইতিমধ্যে রাজ্যসরকার পদক্ষেপও গ্রহন করে। রাজ্য বনাম রাজ্যপালের নয়া বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু এখন কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়। যদিও এবিষয়ে রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “আচার্য আসা না আসা নিয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই। তবে যতটুকু জানি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মেনেই তাকে আমন্ত্রণ করা হয়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × one =