এখনও মেলেনি বর্ধিত বেতন, বকেয়া মেটানোর দাবিতে শিক্ষক বিদ্রোহ

সমস্ত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের এরিয়ারের টাকা, ফেব্রুয়ারি মাসের বেতনের সঙ্গে অথবা মার্চ মাসের ৩১ তারিখের মধ্যেই দিয়ে দিতে হবে। বর্ধিত হারে বেতনের বকেয়া টাকা দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ার দাবি নিয়ে শিক্ষা দফতরেরে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে তৎপড় মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি (এসটিইএ)।

কলকাতা: শিক্ষকদের পৃথক রোপার অধীনে অপশন ফর্ম জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া এখনো জারি রয়েছে অথচ জানুয়ারি মাস থেকেই নতুন বর্ধিত হারে বেতন হাতে পেয়ে গেছেন সরকারি অন্যান্য সমস্ত দফতরের কর্মচারীরা। কিন্তু বেতন কাঠামো নির্ধারণে অপশন জমার ক্ষেত্রে দেরি হওয়ায় নতুন বেতন কাঠামো অনুসারে বেতন হয়নি শুধুমাত্র শিক্ষা দফতরের অধীনস্থ কর্মচারীদের। যে সমস্ত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের অপশন জামা হয়ে গেছে তারাও আছেন এই তালিকায়। তাই বর্ধিত হারে বেতনের সেই বকেয়া টাকা দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ার দাবি নিয়ে প্রথম থেকেই  শিক্ষা দফতরেরে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে তৎপড় হল মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি (এসটিইএ)। সোমবার এনিয়ে সমিতির পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয় যে, সমস্ত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের এরিয়ারের টাকা, ফেব্রুয়ারি মাসের বেতনের সঙ্গে(যাদের অপশন জমা পড়েছে) অথবা মার্চ মাসের ৩১ তারিখের মধ্যেই দিয়ে দিতে হবে। এমনিতেই শিক্ষা দফতরের সমস্ত প্রক্রিয়া নিয়ে একের পর এক বিভ্রান্তি, জটিলতা, দীর্ঘসূত্রতা জারি রয়েছে, এবার তার সঙ্গে যুক্ত হল বর্ধিত হারে বেতনের বকেয়া। তাই এনিয়ে প্রথম থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করতে চাইছেন শিক্ষকরা। এই বকেয়া পেতে তাঁদের যেন আগামী অর্থবছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে না হয় সেবিষয়ে এখন থেকেই তৎপড়তা শুরু হয়েছে।

সোমবার ডেপুটি ডাইরেক্টর অফ অ্যাকাউন্টস (গ্র্যান্ড ইন এড) অলোক সরকারের সঙ্গে এবিষয়ে ফোনে কথা বলেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র। অলোক বাবু জানিয়েছেন, তাঁরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন যাতে দ্রুত এই এরিয়ারের টাকা চলতি অর্থবছরের মধ্যেই শিক্ষকদের  দিয়ে দেওয়া যায়।

সমিতির পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাতে এই মর্মে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর থেকে দ্রুত নির্দেশিকা জারি করে সমস্ত ডিআই দের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি জেলা স্তরেও পদক্ষেপ গ্রহণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমিতির জেলা  সম্পাদকদের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে, তাঁরা যেন অবিলম্বে জেলার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের( যারা নতুন রোপা-২০১৯ অনুসারে ২০২০-র বেতন পাননি) সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং এই দাবি নিয়ে জোটবদ্ধভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তাঁদের বিষয়টি নিয়ে আলাদা করে ডি আই মারফত শিক্ষা দপ্তরের ডিডিএ অলক সরকারের কাছে ডেপুটেশন জমা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে সমিতির পক্ষ থেকে।

 

প্রসঙ্গত, শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীদের অপশন ফর্ম পূরণের জন্য ৯০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে, যার সময়সীমা ১২ মার্চ। এদিকে অপশন নিয়ে বিভ্রান্তির কারণে বেশিরভাগ শিক্ষকই এখনও অপশন ফর্ম পূরণ করেননি। অথচ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানুয়ারি, ২০২০, থেকে নতুন পে কমিশন লাগু করার কথা বলা হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীদের জন্য শিক্ষা দপ্তর থেকে পৃথক রোপা ২০১৯ প্রকাশিত হয়েছে গত ১৩ ই ডিসেম্বর। শিক্ষকদের দাবি মেনেই পৃথক রোপা প্রকাশ করতে দেরি হয়। সরকারি কর্মচারীদের রোপা-২০১৯ প্রকাশিত হওয়ার ৮০ দিন পরে শুধুমাত্র শিক্ষকদের জন্য পৃথক রোপা প্রকাশ করা হয় । ফলে অনলাইনে অপশন এবং ফিকশেশন জমা করার প্রক্রিয়াও শুরু হয় দেরিতে। নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী অপশন ফর্ম পূরণ শুরু হয় ১৪ ই জানুয়ারি থেকে তাও শুধুমাত্র দক্ষিণ বঙ্গের জেলাগুলিতে । তাঁর আরো তিন দিন পরে অর্থাৎ ১৭ ই জানুয়ারি থেকে বাকি জেলাগুলিতে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়। আগামী ১২ মার্চ পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *