নয়াদিল্লি: স্কুলশিক্ষায় বড়সড় পরিবর্ত আনল কেন্দ্র৷ নয়া শিক্ষানীতির সৌজন্যে উঠে যাচ্ছে ১৯৬৮ সালে চালু হওয়া স্কুলশিক্ষার পুরোনো ১০+২ মডেল৷ এখন নতুন পদ্ধতি ফিরতে চলেছে স্কুল শিক্ষায়৷ ৫+৩+৩+৪ মডেল কার্যকর হবে বলে নয়া শিক্ষানীতিতে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা৷
নয়া শিক্ষানীতিতে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে ৮টি সেমিস্টার নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে কেন্দ্রের নীতিতে৷ দ্বাদশ শ্রেণিতে বোর্ডের পরীক্ষায় ৮টি সেমিস্টারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷ পদার্থবিদ্যা, রসায়নের মতো বিষয় নিয়ে পড়লেও ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে পড়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় নয়া নীতিতে৷ নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে মাধ্যমিক৷ স্নাতকে অনার্স কোর্স চার বছর পর্যন্ত করা হয়েছে৷ এছাড়াও পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষার উপর দেওয়া হয়েছে গুরুত্ব৷
দ্বাদশে কলা ও বিজ্ঞান বিভাগে উঠছে তফাৎ৷ পদার্থবিদ্যার সঙ্গে সঙ্গীত নিয়েও পড়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে৷ নয়া শিক্ষানীতি থেকে উঠে যাচ্ছে এম ফিল৷ ৩ বছরের অনার্স কোর্স হচ্ছে ৪ বছরে৷ ১ অথবা ২ বছরে স্নাতকোত্তরের সংস্থান রাখা হয়েছে৷ ৩৪ বছর পর দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এনে বিপ্লব ঘটানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্র৷ কিন্তু, নয়া শিক্ষানীতি ঘিরে নতুন করে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷ এর আগে ১০+২ মডেলে প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত ধরা হত৷ নতুন শিক্ষানীতিতে উচ্চ মাধ্যমিকের ধারনা তুলে দেওয়া হচ্ছে৷ নতুন ব্যবস্থায় উচ্চ মাধ্যমিককে মাধ্যমিকস্তরে ধরা হচ্ছে৷
এখানে পড়ুয়াদের বয়স চারটি ভাবে ভাগ করা হয়েছে৷ ৩ থেকে ৪ বছর, ৮ থেকে ১১ বছর, ১১ থেকে ১৪ বছর, ১৪ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত পড়ুয়াদের শ্রেণি বিন্যাশ করা হয়েছে৷ প্রাক প্রাথমিকেও দু’টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে৷ ৩ বছর পর্যন্ত গ্রেড-১, দু’বছরে গ্রেড-২৷ এর পর তিন বছর প্রস্তুতিমূলক স্তরের গ্রেড ধরা হয়েছে ৩,৪,৫ করে৷ পরের তিন বছরে উচ্চ প্রাথমিক স্তরে গ্রেড ধরা হয়েছে ৬,৭ ও ৮৷ সবশেষে চার বছরের মাধ্যমিকস্তর৷ দেওয়া হয়েছে ৯,১০,১১ ও ১২৷ এভাবেই ৫+৩+৩+৪ পদ্ধতি চালু হচ্ছে৷
নতুন শিক্ষানীতিতে বলা হয়েছে, স্কুলের আগে তিন বছরের প্রাক-স্কুল শিক্ষা রাখা হচ্ছে৷ ১০+২ স্কুল শিক্ষা ব্যবস্থার বদলে ৫+৩+৩+৪ ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে৷ তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি প্রস্তুতিপর্ব হিসাবে ধরা হয়েছে৷ ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি মাঝারি পর্বের শিক্ষা বলে ধরা হচ্ছে৷ নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি মাধ্যমিক শিক্ষা হিসাবে ধরা হচ্ছে৷ পাঠ্যক্রমে সামগ্রিক শিক্ষা, যুক্তিবাদী ভাবনা, সৃজনশীলতা, দলগত ভাবে কাজ, সামাজিক দায়বদ্ধতা, একাধিক ভাষা শিক্ষা ও ডিজিটাল শিক্ষায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷