হাওড়া: তিন বছর বয়স থেকেই চলাফেরায় অক্ষম অর্ঘ্য। তবুও একপ্রকার মনের জোড়ে হার না মানার শপথ নিজের মধ্যে ধারণ করেছিল সে৷ আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া বাবা হুইল চেয়ার কিনে দিতে পারেননি৷ এবার অর্ঘ্য'র পাশে এগিয়ে শিক্ষক সৌভিক চৌধুরি৷
স্বপ্ন সবাই দেখে৷ কিন্তু স্বপ্নকে সত্যি করার জেদ থাকে কজনের? প্রতিকূলতার মধ্যেও নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে সদা প্রস্তুত কিশোর৷ অর্ঘ্য জানিয়েছে, হাওড়া জেলার বাগনান ব্লক ১ এর পূর্ণাল গ্রামের বাসিন্দা সে৷ বছর বয়স থেকে বাড়ির বাইরে বেরোনোর জন্য একমাত্র ভরসা তার মা৷ চলাফেরার পাশাপাশি বর্তমানে খাতা পেন হাতে ধরতেও সমস্যা হয় বছর তেরোর অর্ঘ্য'র৷
দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার অর্ঘ্য'র। সামর্থ্য নেই হুইল চেয়ার কেনার। বহুদিন ধরেই নানা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এ বিষয়ে জানিয়েও কোনও ফল পাননি অর্ঘ্য'র বাবা। এবার তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ালেন আমতার এক শিক্ষক সৌভিক চৌধুরি। রসায়নের শিক্ষক সৌভিকবাবু নিজের জন্মদিনে অর্ঘ্য'র হাতে তুলে দিলেন একটি হুইল চেয়ার৷ অমরাগড়ি মেনকা স্মৃতি বিদ্যামন্দিরের শিক্ষক সৌভিক নিজে একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত, যেখানে সারা বছর ধরে অসহায় পড়ুয়াদের সাহায্য করা হয়৷ সংস্থার তরফে এই খবর পেয়েছিলেন তিনি৷ অর্ঘ্য'র হুইল চেয়ার পেয়ে জানিয়েছে, ‘সত্যিই এটার খুব দরকার ছিল আমার৷ আমার পড়াশোনা ও চলাফেরার ক্ষেত্রে অনেকটা সুবিধা হবে৷’’
অর্ঘ্য'র মা প্রিয়াঙ্কা দেবী'র কথায়, ছোটবেলায় হাটাচলা শিখেছিল অর্ঘ্য। কিন্তু তিন বছর বয়সের পর থেকে সে আর হাটাচলা করতে পারেনি৷ ভবিষ্যতে কোনও দিন হয়ত পারবেও না। তবুও অর্ঘ্য'র মনের সফল হওয়ার জেদ তাকে থামিয়ে দিতে পারেনি। সৌভিক বাবুর দেওয়া উপহার অর্ঘ্যকে ভবিষ্যতের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যেতে সাহায্য করল৷