নয়াদিল্লি ও কলকাতা: আজ সোমবার রাজ্যের সমস্ত শিক্ষামন্ত্রীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছেন। এই বৈঠক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি করা হবে। জানা গিয়েছে, এই বৈঠকে রাষ্ট্রপতি রমানাথ কোভিন্দও উপস্থিত থাকতে পারেন৷ শিক্ষা সচিবদের পাশাপাশি বাংলা সহ আরও কয়েকটি জেলার রাজ্যপালদেরও এখানে উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে বলে খবর।
দীর্ঘ ৩০ বছর পর জাতীয় শিক্ষানীতির আমূল পরিবর্তন আনতে চেষ্টা করছে মোদী সরকার। কিন্তু বাংলা সহ একাধিক রাজ্য, কেন্দ্রের এই নয়া শিক্ষানীতির বিরোধীতা করে এসেছে প্রথম থেকেই। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, রাজ্যগুলিকে অন্ধকারে রেখে এই নীতি রূপায়ন করতে চাইছেন কেন্দ্র সরকার। পাশাপাশি রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় আগেই এই শিক্ষানীতিকে 'স্বপ্নের ফানুস' বলে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, নয়া শিক্ষানীতির সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই। কেন্দ্র যে পরিকল্পনার কথা বলেছে তাতে প্রচুর অর্থ প্রয়োজন। সেই বিপুল পরিমাণে টাকা কে দেবে, কোথা থেকে আসবে, তা বলা হয়নি। তা নিয়ে কোনও আলোচনা করেনি কেন্দ্র সরকার।
বাংলার পাশাপাশি এই শিক্ষানীতির প্রথম বিরোধীতা করেছিল তামিলনাড়ু রাজ্য। এই শিক্ষানীতি তারাও মানবে না বলে জানিয়েছিলেন। রবিবার পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, ৭ তারিখের বৈঠকে তিনি উপস্থিত থাকবেন, সঙ্গে থাকবেন রাজ্যের শিক্ষা সচিব মণীশ জৈন। পার্থ বাবু'র কথায় বিদেশে যেরকম শিক্ষানীতির চল আছে একই রকম ভাবে ভারতেও এই শিক্ষানীতি শুরু করতে চাইছেন কেন্দ্র সরকার। কিন্তু এই নীতি কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
তিনি এর আগে বলেছিলেন এই নীতি কার্যকর হলে যে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে তা রাজ্য গুলির ওপর বর্তাবে। ফলে রাজ্যের কোষাগারে টান পড়বে। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, এই নীতি কার্যকর করতে হলে রাজ্যের সমস্ত স্কুলকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে পরিণত করতে হবে যা কোনও ভাবেই সম্ভব হবে না উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে। পাশাপাশি মাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলির ভবিষ্যত প্রশ্ন চিহ্নের মুখোমুখি দাঁড়াবেরাজ্যের বামপন্থীরাও এই নীতির বিরোধীতা করে পথে নেমেছিলেন। পাশাপাশি কেন্দ্রের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের তরফে রাহুল গান্ধীও এই নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। মূলত বিরোধীদের চাপের মুখে পড়েই কেন্দ্র সরকার এই নীতি পর্যালোচনা করার জন্যে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই মতোই আজ, সোমবার অনলাইনে এই বিষয়ে সরাসরি রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা করতে চলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।