বকেয়া ফি মেটাতে ‘স্কুল কমিটি’ গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের, সিদ্ধান্ত নেবে কমিটি

কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ অনুযায়ী, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের ৮০ শতাংশ ফি ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মেটাতে হবে। পাশাপাশি এই নিয়ে স্কুলগেটের সামনে কোনও ধরনের বিক্ষোভ করা যাবে না বলেও নির্দেশ দিল আদালত। সেক্ষেত্রে স্কুলের সামনে বিক্ষোভ হলে স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে পুলিশেও খবর দিতে পারেন।

 

কলকাতা: করোনা আবহে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকলেও বকেয়া ফি মেটানো নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের মধ্যে লড়াই চলছিল বেশ কয়েকমাস ধরে৷ এদিকে স্কুলের সমস্ত অভিভাবকদের আর্থিক ও সামাজিক অবস্থানও সমান নয়। এই মামলা গিয়েছিল হাইকোর্টের কাছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ স্কুল-কমিটি বেঞ্চ গড়ে সমস্যা মেটানোর কথা সাফ জানিয়ে দিল স্কুলগুলিকে।

কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ অনুযায়ী, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের ৮০ শতাংশ ফি ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মেটাতে হবে। পাশাপাশি এই নিয়ে স্কুলগেটের সামনে কোনও ধরনের বিক্ষোভ করা যাবে না বলেও নির্দেশ দিল আদালত। সেক্ষেত্রে স্কুলের সামনে বিক্ষোভ হলে স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে পুলিশেও খবর দিতে পারেন।

লকডাউনের ফলে বহু মানুষই আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছেন। তার মধ্যেই বেসরকারি কিছু স্কুল তাদের বকেয়া ফি বৃদ্ধি করে এবং লকডাউনে পরিষেবা বন্ধ থাকালেও স্কুল বাসের ভাড়া-সহ একাধিক ফি দেওয়ার আবেদন করে অভিভাবকদের। তারপরেই ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে এবং পরিষেবা বন্ধ থাকা সত্ত্বেও একাধিক ফি নেওয়ার অভিযোগে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বিনীত রুইয়া নামে এক অভিভাবক। মঙ্গলবার বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ সেই মামলার শুনানি করে জানায়, প্রতিটি বেসরকারি স্কুলকে আলাদা আলাদা কমিটি গড়তে হবে। হাইকোর্ট তরফে বলা হয়, ওই কমিটিতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছাড়াও ৩ জন প্রবীণ শিক্ষক এবং ৩ জন অভিভাবক থাকবেন। আদালতের নির্দেশানুযায়ী, স্কুলের ফি সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে এই কমিটি।

স্কুলের আয়-ব্যয়ের হিসাব খতিয়ে দেখার জন্যে উচ্চ আদালত দুই সদস্যের কমিটি গড়েছিল। সেই কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন সভানেত্রী গোপা দত্ত। সম্প্রতি সেই কমিটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে আদালতে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, বেশ কিছু স্কুল তাদের মাসিক হিসাব পুরোপুরি খোলসা করেনি। পাশাপাশি একাধিক ক্ষেত্রে অসংগতিও লক্ষ্য করা গিয়েছে। লকডাউনের জেরে স্কুল বন্ধ থাকা সত্ত্বেও বিদ্যুতের টাকা এবং স্কুলবাসের ভাড়া নেওয়া হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের থেকে এর সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা চেয়েছে আদালত। অন্যদিকে ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে একাধিক কর্মসূচি গ্রহণের কারণে ওই স্কুল গুলির কয়েকটি খাতে খরচ বেড়েছে। অতিমারীর সময়ে কোনও শিক্ষককে ছাঁটাই করা হয়নি পাশাপাশি তাঁদের পুরো বেতন দেওয়া হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে। হাইকোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশকে অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ উভয় তরফেই মেনে নেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *