কলকাতা: রেড রোড কাণ্ডের রায় ঘোষণা করলেন কলকাতা নগর দায়রা আদালতের দ্বিতীয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক ডঃ মৌমিতা ভট্টাচার্য৷ ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে মূল অভিযুক্ত সাম্বিয়াকে৷ এদিন সাম্বিয়াকে দু’বছরের কারাদণ্ড ও ১ লক্ষ১০ হাজার টাকারা জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে মহম্মদ সোহরাব, জনি ও শানুকে বেকসুর খালাস করেছে আদালত৷ ইতিমধ্যেই সাম্বিয়া দু’বছর জেলেই রয়েছে৷ ফলে, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী খুব দ্রুত মুক্তিও পেয়ে যেতে পারে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার ছেলে৷
রেড রোড কাণ্ডে সাম্বিয়ার বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় খুনের অভিযোগ এনেছিল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ৷ এই ধারাতেই তাঁর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয় ও চার্জশিট দেওয়া হয়৷ আজ কলকাতা নগর দায়রা আদালতের দ্বিতীয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক মৌমিতা ভট্টাচার্য ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ এর বদলে ৩০৪-এ এবং ৪২৭ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে দু’বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন সাম্বিয়াকে৷ অন্য একটি মামলায় ছ’মাসের কারাবসের সাজাও দেওয়া হয়েছে তাকে৷ পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা ও এক লক্ষ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে৷
এদিন মামলার শুনানিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লঘু ধারা দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত৷ ভরা এজলাসে কলকাতা পুলিশকে ভর্ৎসনাও করা হয় বলে আদালত সূত্রে খবর৷ আদলতের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় কলকাতা গোয়েন্দা পুলিসের হোমিসাইড শাখাকেও৷ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়েও মুখ খোলেন বিচারক৷ করেন সমালোচনা৷
২০১৬ সালে জামিনযোগ্য ধারায় মামলায় আত্মসমর্পণের ১৫ মিনিটের মধ্যেই জামিন পেয়ে যান তৃণমূল মহম্মদ সোহরাব৷ ১.৫ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পেয়ে গেলেন রেডরোড কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সাম্বিয়া সোহরাবের বাবা৷ চার্জশিটে কেন জামিনযোগ্য ধারা, তা নিয়ে তখনই ওঠে প্রশ্ন৷ এবার তথ্যপ্রমাণের অভাবে মহম্মদ সোহরাব, জনি ও শানুকে বেকসুর খালাস করেছে আদালত৷
২০১৬ সালের ১৩ জানুয়ারি সকালে রেড রোডে সাধারণতন্ত্র দিবসের প্যারেডের মহড়া চলাকালে এক বায়ুসেনার ফৌজি গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। সেই ঘটনায় শহর জুড়ে ব্যাপক শোরগোল সৃষ্টি হয়। প্রথমে মামলার তদন্ত শুরু করে ময়দান থানা। পরে তদন্তভার গ্রহণ করে কলকাতা গোয়েন্দা পুলিসের হোমিসাইড শাখা। সরকারি আইনজীবী জানান, জেল হেফাজতে থাকা মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুন, খুনের চেষ্টা এবং মোটর ভেহিকেলসের নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। আর বাকি তিনজনের বিরুদ্ধে মূল অভিযুক্তকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ এনে এফআইআর দায়ের করা হয়৷ পরবর্তী সময় ওই ধারায় চার্জ গঠন করে শুরু হয় এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া।