কলকাতা: ২৪ ঘণ্টা ধরে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করল ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্ট কমিশন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্প্রতি একটি চিঠি লিখে কেন্দ্রীয় নিয়ামক সংস্থা ইউজিসি জানিয়েছে, উত্তরপত্র ২৪ ঘণ্টা ধরে লেখার সুযোগ দিলে তা কখনই পরীক্ষা নয়। তাকে হোম অ্যাসাইনমেন্টে বলে। পরীক্ষা ২-৩ ঘণ্টার মধ্যেই শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে ইউজিসি।
ইউজিসির চিঠি পাওয়ার পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শুক্রবার ফ্যাকাল্টি কাউন্সিল এবং বোর্ড অব স্টাডিজের বৈঠক ডাকে। সেই বৈঠকে ইউজিসির নির্দেশ মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে পরবর্তী সিন্ডিকেট বৈঠকে এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় করোনা পরিস্থিতির মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ার এক উপায় ঠিক করে। সিদ্ধান্ত হয়েছিল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ইমেল বা হোয়াটসঅ্যাপে পরীক্ষার্থীদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে ও ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। পরীক্ষার্থীরা উত্তর লিখে উত্তরপত্র স্ক্যান করে বা তাদের উত্তর ওয়ার্ড ফাইলে টাইপ করে কলেজগুলিকে পাঠিয়ে দেবেন। এছাডড়া কলেজে এসে উত্তরপত্রের হার্ডকপি জমা দেওয়ার রাস্তাও খোলা রাখা হয়। কিন্তু পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা ছিল না।
আরও পড়ুন: নেটের স্পিডে ই-ক্লাসে বাধা? সমাধানে ‘দীক্ষক’ আনছে আইআইটি খড়গপুর
এদিকে ইউজিসি পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে চূড়ান্ত বর্ষ পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে। রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে যাতে অক্টোবরের শেষের দিকে এর ফল প্রকাশিত হয়। এতে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি শিগগিরই শুরু করা যায়। ইউজিসির জুলাই নির্দেশিকাতে, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসন এর বিরোধিতা করে। মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপও চেয়েছিলেন। পরে আগস্টে সুপ্রিম কোর্ট ইউজিসির এই নির্দেশকে সমর্থন করে যে, চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা না লিখে শিক্ষার্থীদের পদোন্নতি দেওয়া যাবে না। তবে আদালত ৩০ সেপ্টেম্বরের সময়সীমা অতিক্রম করে পরীক্ষা স্থগিত করার জন্য রাজ্যগুলিকে স্বাধীনতা দিয়েছে। এরপর পশ্চিমবঙ্গ সরকার ইউজিসির কাছে অক্টোবরে নতুন তারিখ নিয়ে যোগাযোগ করে।
পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষা সচিব মনীশ জৈনকে ইউজিসি সচিব রজনীশ জৈন একটি চিঠি লিখেছিলেন “শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা এবং তাদের অ্যাকাডেমিক অগ্রগতির বৃহত্তর স্বার্থকে সামনে রেখে ইউজিসি আপনার অনুরোধটি মানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই অনুসারে রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে চূড়ান্ত বর্ষ / টার্মিনাল সেমিস্টার পরীক্ষা ১৮ অক্টোবরের মধ্যে শেষ করতে হবে।” রাজ্যের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে, যেমন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ইতিমধ্যে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ফলাফল প্রকাশ করেছে।