বারাসত: ফের মোদির সভায় চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা৷ হুড়োহুড়ির জেরে জখম বেশ কয়েকজন৷ মাঠ ছোট হওয়ার কারণেই এই বিপত্তি বলে সভামঞ্চ থেকে জানিয়ে দেন নরেন্দ্র মোদি৷ ভাষণ থামিয়ে নিয়েই দর্শকদের শান্ত থাকতে নির্দেশ দেন৷ কিন্তু, মোদির নির্দেশ উপেক্ষা করে বাঁশের ব্যারিকেডের উপর উঠে পড়েন বহু দর্শক৷ একে অপরের উপর ঘাড়ের উপর পড়তে থাকেন৷ ভিড়ের মধ্যে থেকে সভা লক্ষ্য করে উড়ে আসতে থাকে ইট, পাথর৷ চলে চেয়ার ছোড়াছুড়ি৷ হুড়োহুড়ির মাঝে পড়ে জখম হন বেশ কয়েকজন৷ পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তড়িঘড়ি ভাষণ থামিয়ে মঞ্চ ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী৷
লোকসভা নির্বাচনের আগে মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান বড়মা বীণাপাণি দেবীর আশীর্বাদ দিয়ে বাংলায় ভোট প্রচার শুরু করলেন নরেন্দ্র মোদি৷ আজ, দুপরে অসুস্থ বড়মার বাড়িতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর সঙ্গে দেখা করেন৷ কথাও বলেন৷ মিনিট পাঁচেক কথা বলার পর সভামঞ্চে উঠে যান মোদি৷ এদিন সভামঞ্চে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় মতুয়া মহাসঙ্ঘের তরফে৷ দেওয়া হয় সোনার স্তবক৷এদিন মঞ্চে উঠে রামকৃষ্ণ পরমহংস, স্বামী বিবেকানন্দ, চৈতন্যদেব, হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুর ও বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নিয়ে শুরু করেন ভাষণ৷
Prime Minister Narendra Modi addressing a public rally in Thakurnagar, West Bengal: We’ve brought the Citizenship amendment bill. I appeal to TMC to support this bill and let it pass in the Parliament. pic.twitter.com/LolSDzogiA
— ANI (@ANI) February 2, 2019
শুরুতেই কেন্দ্রের উন্নয়নমূলক কাজের প্রচার শুরু করেন মোদি৷এদিন মতুয়াদের নাগরিকত্ব ইস্যু তুলে ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন মোদি৷ সভায় ভিড় দেখে মোদি বলেই ফললেন, ‘‘ভিড় দেখেই বুঝতে পারছি, দিদি কেন হিংসার রাস্তায় নেমেছে৷’’ এদিন মমতাকে কটাক্ষ করে ‘গণতন্ত্রণ বাঁচাতে’ বাংলায় ‘নাটক’ হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি৷ গণতন্ত্র বাঁচানোর নামে সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি৷ নাগরিকত্ব বিলের প্রসঙ্গ তুলে মোদি দাবি করেন, ‘‘এই দেশে প্রতিটি হিন্দু নাগরিকত্ব পাবেন৷ এই জন্য আমরা বিল এনেছি৷ কিন্তু, অনেকেই এই বিরোধিতা করছে৷ আপনারা বলুন, হিন্দুদের নাগরিকত্ব পাওয়া উচিত কি না৷’’ এদিন সভায় উপচে পড়া ভিড়ে হুড়োহুড়ি শুরু হতেই বেশ কয়েকবার ভাষণ থামিয়ে সবাইকে শান্ত থাকতেও বলেন৷
শুক্রবার বাজেট প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ‘‘এই বাজেট তো সবে শুরু৷ পরে যখন পূর্ণ বাজেট হবে, তখন দেখবেন বিকাশ কীভাবে হবে৷’’ প্রশ্ন উঠছে, তাহলে মোদির পাঁচ বছরে ছ’বারের বাজেট কী তবে, বিকাশের সুযোগ মেলেনি? পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে আরও পাঁচ বছর সরকারে থাকার ইচ্ছাই প্রকাশ করলেন মোদি৷ এদিন, কৃষক ও শ্রমিকদের সমস্যা সমাধান হবে বলেও এদিন ফের প্রতিশ্রুতি দেন মোদি৷ এদিন মোদির সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের বেশিরভাগটাই ছিল কেন্দ্রের উন্নয়ন প্রচার৷ ছিল বাজেট প্রসঙ্গ৷ কিন্তু, যে পিছিয়ে পড়া মতুয়াদের কল্যাণের জন্য আজ উড়িয়ে নিয়ে আনা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীকে, তাঁদের জন্য ‘নাগরিকত্ব বিলে’র কথা ছাড়া আর কোনও প্রতিশ্রুতিই দিতে পারলেন না মোদি৷