রাজীব কুমার চিটফান্ড কাণ্ডে যুক্ত? প্রমাণ করে দেখান: মমতা

কলকাতা: রাজীব কুমারের বাড়িতে CBI অভিযান প্রসঙ্গে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এদিন রাজীব কুমারের পাশে দাঁড়িয়ে নরেন্দ্র মোদিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ নির্বাচন আসলেই সিবিআইয়ের তৎপরতা বেড়ে যায় বলেও অভিযোগ তোলেন মমতা৷ ভোট এলেই সিবিআইকে ব্যবহার করা হয় বলেও জানান৷ এদিন তিনি বলেন, ‘‘এই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে ঘৃণা হয়৷ এরা

রাজীব কুমার চিটফান্ড কাণ্ডে যুক্ত? প্রমাণ করে দেখান: মমতা

কলকাতা: রাজীব কুমারের বাড়িতে CBI অভিযান প্রসঙ্গে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এদিন রাজীব কুমারের পাশে দাঁড়িয়ে নরেন্দ্র মোদিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ নির্বাচন আসলেই সিবিআইয়ের তৎপরতা বেড়ে যায় বলেও অভিযোগ তোলেন মমতা৷ ভোট এলেই সিবিআইকে ব্যবহার করা হয় বলেও জানান৷ এদিন তিনি বলেন, ‘‘এই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে ঘৃণা হয়৷ এরা কাউকে কথা বলতে দিচ্ছে না৷ জাতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দিয়ে মিথ্যা কথা বলানো হচ্ছে৷ বলা হচ্ছে, রাজীব কুমার নাকি চিটফান্ড কাণ্ডে যুক্ত? প্রমাণ করে দেখান৷ মিথ্যা কথা বলেন না৷’’

মোদীর হুমকির পরেই আজ সিবিআই হানা দিয়েছে৷ এটা জরুরি অবস্থার চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতি বলেও মন্তব্য করেন মমতা৷ বলেন, ‘‘আমরাই চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির তদন্ত করতে শুরু করি। আমরাই প্রথম চিট ফান্ড মালিককে গ্রেপ্তার করি৷ কোর্টের নির্দেশে মামলার তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে গিয়েছে৷ পাঁচ বছর হয়ে গিয়েছে৷ যেই একটা করে নির্বাচন আসে, চিট ফান্ডের নাম করে যা ইচ্ছা করছে, যেখানে ইচ্ছা ঢুকছে৷’’ এদিন মোদি-শাহকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে সংবিধানের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন৷ এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ রাত থেকে তিনি ‘সংবিধান বাঁচানো’র ধর্নায় বসবেন বলেও জানান তিনি৷ সোমবার মন্ত্রীসভার বৈঠক সেখানেই হবে বলেও জানান তিনি৷

এই ঘটনার প্রতিবাদে রাতভর বিক্ষোভ ধর্না কর্মসূচির ঘোষণা তৃণমূলের৷ মেট্রো চ্যানেলের ধর্না বসতে চলেছে তৃণমূল নেতৃত্ব৷ সোমবার এই নিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হতে চলেছে তৃণমূল৷ এদিনের এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই টুইট করেন তৃণমূলের মুখপাত্র ডেরেক ওব্রায়েন৷ টুইটে লেখেন, ‘‘নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক আক্রমণ চালানো হচ্ছে৷’’ পরিকল্পনা করে এই সাংবিধানিক আক্রমণ করছে বলে টুইট করে জানান তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন৷

অন্যদিকে, আজ কোনও নথি দেখাতে না পারায় সিসিআই আধিকারিকদের আটক করে কলকাতা পুলিশ৷ সেক্সপিয়র সরণি থানার মধ্যে সিবিআই আধিকারিকদের নিয়ে যাওয়া হয়৷ এদিন সিবিআই আধিকারিক তথাগত বর্মণকে রাস্তা থেকে টেনে হেঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়৷ রাজীব কুমারের বাড়ির সামনে যে আধিকারিকরা ছিলেন, তাঁদের সেক্সপিয়র সরণি থানায় তুলে নিয়ে আনা হয়৷ পার্কস্ট্রিস থানা থেকেও সিবিআই আধিকারিকদেরও সেক্সপিয়র সরণি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়৷ সিবিআই আধিকারিকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না তা পুলিশের তরফে জানানো হয়নি৷ কেন তাঁদের রাস্তা থেকে টেনে হেঁচড়ে কেন পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হল, তাও পুলিশের তরফে জানানো হয়নি৷এদিনের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির খবর পেয়ে রাজীব কুমারের বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী৷ এডিজি আইনশৃঙ্খলা রাজীব কুমারের বাড়িতে যান৷ রাজীব কুমারের বাড়িতে যান মেয়র ফিরহাদ হাকিম৷ প্রায় ঘণ্টাখানিক বৈঠকে বসেন তিনি৷

এদিন সন্ধ্যায় সিবিআইয়ের একটি দল লাউডন স্ট্রিটে রাজীব কুমারের বাড়ির সামনে যায়৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চলে যান দুই পুলিশ কর্তা সহ বিশাল পুলিশবাহিনী৷ দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনার পর সিবিআইয়ের কয়েকজন গোয়েন্দা শেক্সপীয়র সরণী থানায় যান৷ বাকিরা অপেক্ষা করছিলেন নগরপালের বাড়ির বাইরে৷ কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁদের ওই এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা জানালেও তা মানতে নারাজ ছিলেন তাঁরা৷ এরপর ওই সিবিআই আধিকারিকদের আটক করে শেক্সপীয়র সরণী থানায় নিয়ে যায় পুলিশ৷ এর কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে চলে আসেন মুখ্যমন্ত্রী ও এডিজি আইনশৃঙ্খলা অনুজ শর্মা৷ পরে সিবিআই আধিকারিক তথাগত বর্ধনকেও আটক করে পুলিশ৷ পাশাপাশি সল্টলেকে সিবিআইয়ের দপ্তর সিজিও কমপ্লেক্স ঘিরে ফেলেছে পুলিশ৷

এদিন রাজীব কুমারের বাড়িতে CBI অভিযানে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশের৷ আজ, সন্ধ্যায় CBI-এর ৪০ জনের একটি দল রাজীব কুমারের বাড়িতে যান৷ এদিন কলকাতা পুলিশের তরফে থানায় যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়৷ বাধা পেয়ে থানায় জানা সিবিআইয়ের কর্তারা৷ এদিন প্রথমে সিবিআইয়ের একটি দল পার্কস্ট্রিস থানায় যায়৷ সেখানে একটি চিঠি দিয়ে প্রাপ্তি স্বীকার করতে বলা হয় সিবিআইয়ের তরফে৷ পুলিশের তরফে তা ফিরিয়ে দেওয়া হয়৷ পরে, আরও একটি দল সেক্সপিয়র সরণি থানায় যায়৷এদিন সিবিআইয়ের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন কলকাতা পুলিশের তিন জন ডেপুটিকমিশনার৷

এদিন, সন্ধ্যায় রাজীব কুমারের লাউডন স্ট্রিটের বাড়ির সামনে সিবিআই আধিকারিকদের আটকানো হয়৷ সিবিআই আধিকারিকদের থানায় যেতে বলা হয়৷ রাস্তার উপর পুলিশ ও সিবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে বচসা তৈরি হয়৷ প্রায় আধঘণ্টা উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়৷

সারদাকাণ্ডে কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে সিবিআই তলব প্রসঙ্গে ১০টি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অস্বীকার করে কলকাতা পুলিশ৷ রবিবার কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজে বিবৃতি দিয়ে দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শনিবার থেকে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের ‘খোঁজ’ করছে সিবিআই, এই সংক্রান্ত খবর ভিত্তিহীন৷ তিনি দফতরেই রয়েছেন৷ এই ধরনের খবর প্রকাশিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমগুলির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়৷

এদিন বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, কলকাতা পুলিশ কমিশনার শহরেই রয়েছেন৷ নিয়মিত অফিসেও আসছেন৷ মাঝে ৩১ জানুয়ারি একদিনের জন্য ছুটি নিয়েছিলেন৷ তাঁকে নিয়ে ভিত্তিহীন খবর ছড়ানোর হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে৷ বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, সঠিক তথ্য জোগাড় না করে কলকাতা পুলিশ ও কমিশনারের মানহানি করা হয়ে থাকলে কঠোর আইনি পদক্ষেপ করা হবে৷ এই বিবৃতির পরই আজ, সন্ধ্যায় রাজীব কুমারের বাড়ির সামনে হাজির হন সিবিআইয়ের ৪০ জনের একটি দল৷ যদিও সিবিআইয়ের অভিযান প্রসঙ্গে রবিবার সন্ধ্যা ৬:৩৫ পর্যন্ত কলকাতা পুলিশের তরফে কোনও বিবৃতি বা আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়নি৷

রবিবার রাজীব কুমারকে নিয়ে ‘ভিত্তিহীন’ খবর প্রকাশিত হওয়ার পরই টুইটারে প্রতিক্রিয়া দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তোলেন তিনি৷ পুলিশ কমিশনারের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘‘প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে বিজেপি৷ ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুলিসকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে৷ এটা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে ধ্বংস করে দিতে চাইছে৷ কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিশ্বের অন্যতম সেরা আধিকারিক৷ তাঁর সাহস, সততা প্রশ্নাতীত৷ তাঁর একদিনের ছুটি নিয়ে মিথ্যা রটানো হচ্ছে৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 4 =