নদিয়া : নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনে গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জনকে। সেই সঙ্গে সাসপেন্ড করা হয়েছে হাঁসথালি থানার ওসি অনিন্দ্য বোসকে। এছাড়া বিজেপি নেতা মুকুল রায়-সহ চার জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। এফআইআরের পাল্টা, আইনি পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন মুকুল রায়ও। ঘটনার পরেই তদন্তভার নেয় সিআইডি। এদিকে বিধায়ক খুনের ঘটনায় উঠে আসে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেছে, এক জন নিরাপত্তারক্ষী পেতেন বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস। কিন্তু গত শনিবার ছুটিতে ছিলেন বিধায়কের নিরাপত্তারক্ষী। অনুমান, দুষ্কৃতীরা এই বিষয়ে ভালোভাবেই ওয়াকিবহল ছিল। যেহেতু বিধায়কের সঙ্গে কোনো নিরাপত্তারক্ষী নেই, সেই অরক্ষিত অবস্থার সুযোগ নিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। বিধায়কের নিরাপত্তা রক্ষীকেই সাসপেন্ড করার পাশাপাশি, তার বিরুদ্ধেও বিভাগীয় তদন্তেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, শনিবার সন্ধ্যায় সরস্বতী পুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়ে খুন হন বিধায়ক সত্যজিত্ বিশ্বাস। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে বিধায়ককে খুন করে দুষ্কৃতীরা। গুলি করেই চম্পট দেয় দুষ্কৃতীদল। প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন, আগ্নেয়াস্ত্র ফেলেই পালায় তারা। স্থানীয়দের দাবি, ওই দিন অনুষ্ঠান চলাকালীন ১০-১১ বার লোডশেডিং হয়। এটাও পরিকল্পনার অংশ ছিল কিনা খাতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। চলছে তথ্য সংগ্রহ এবং নমুনা সংগ্রহের কাজ ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধায়ক খুনে অভিযুক্ত যে দু-জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁরা হলেন সুজিত মণ্ডল এবং কার্তিক মণ্ডল। এ দিন সকাল থেকেই তাঁদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এর পরই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। এছাড়াও স্থানীয় যুবক অভিজিৎ পুন্ডারির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন নিহত বিধায়কের ভাই সুমিত বিশ্বাস৷ তিনি অভিযোগ করেন করেন, অভিজিৎই দাদাকে খুন করেছে ৷ অভিজিৎ পুন্ডারি এলাকায় বিজেপি কর্মী হিসেবেই পরিচিত৷ খুনের পরই পালিয়ে যায় অভিজিৎ৷ অন্যদিকে তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তিনি বলেন, উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তাঁর নাম জড়ানো হচ্ছে। সত্যজিৎ বাচ্চা ছেলে, খুব ভালো ছেলে। তাঁর মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। প্রয়োজনে সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করানো হবে। তাঁর নামে এফাআইআরের ফলে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। সেজন্য পাল্টা আইনি পদক্ষেপের কথাও জানান তিনি। একই দাবি তুলেছেন বিজেপি জেলা সভাপতি দিলীপ ঘোষও। তাঁর কথায়, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানো হোক। ঘটনার সত্য সামনে আসবে। রবিবার সকালেই হাঁসখালিতে পৌঁছে যান তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনিও জানান, অত্যন্ত দক্ষ ও জনপ্রিয় এই নেতার খুনের পিছনে যাঁরা দায়ী, তাঁদের কোনও মতেই ছাড় দেওয়া হবে না।