কলকাতা: রাজ্যের কলেজগুলিতে স্নাতক স্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে নিয়মের বড়সড় বদল আসতে চলেছে৷ এবার থেকে স্নাতক স্তরে পড়ুয়াদের ভর্তি নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় ভাবে। সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নিজস্ব কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এই বিষয়ে আগামী সপ্তাহেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চলেছে উচ্চশিক্ষা দফতর।
আরও পড়ুন- ফের সাফল্যের শীর্ষে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, দেশের মধ্যে সেরা! কোন বিভাগে এল সম্মান?
বিকাশ ভবন সূত্রে খবর, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির নিজস্ব কেন্দ্রীয় পোর্টাল থেকেই সংশ্লেষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন সকল কলেজে ভর্তির যাবতীয় তথ্য পাবেন পড়ুয়ারা৷ ওই পোর্টালে গিয়ে পড়ুয়াদের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজে ভর্তির আবেদন জানাতে পারবেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মোট কতগুলি কলেজে ভর্তির আবেদন জানাতে পারবেন পড়ুয়ারা? এই বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি শিক্ষা দফতর। তবে বলা হয়েছে, এবার থেকে আবেদন জানাতে গেলে আগের মতোই অনলাইনেই ফি জমা দিতে হতে পারে পড়ুয়াদের। উল্লেখ্য, করোনা আবহে গত দুই বছর ধরে কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে ফি মকুব করা হয়েছিল পড়ুয়াদের৷ এবার ফের অনলাইনে আবেদন ফি জমা দিতে হবে কি না, আগামী সপ্তাহের বৈঠকে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷
শিক্ষামহলের একাংশ মনে করছে, কলেজগুলিতে কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইনে ভর্তির ব্যবস্থা চালু করা হলে বছরের পর বছর ভর্তি নিয়ে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে, তা অনেকটাই হ্রাস করা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে কলেজগুলিতে আসন ফাঁকা থাকার সমস্যাও অনেকটাই মিটবে। প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে রাজ্যে প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পরেই তৃণমূল সরকার কেন্দ্রীয় ভাবে কলেজে ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই সময়েও রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন ব্রাত্য বসু। কিন্তু সেই সময় এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। ১১ বছর পর সেই পথেই হাঁটল তৃণমূল সরকার৷
বিগত কয়েক বছর ধরে অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হলেও কেন্দ্রীয় ভাবে তা হয়নি। ফর্ম তোলা এবং জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া অনলাইনে হলেও, কাউন্সেলিংয়ের জন্য নথিপত্র নিয়ে সংশ্লিষ্ট কলেজেই যেতে হত পডুয়াদের। আর সেখানেই লুকিয়ে ছিল দুর্নীতির বীজ৷ এই স্তরেই টাকা দিয়ে আসন পাইয়ে দেওয়ার খেলা চলত৷ এ ক্ষেত্রে অভিযোগের আঙুল উঠত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দিকেই৷ সেই সমস্যা মেটাতেই বলা হয়েছিল, ছাত্র সংসদ কলেজে কোনও ‘হেল্প ডেস্ক’ করতে পারবে৷ ২০১৯ সালে ক্লাস শুরুর আগে পড়ুয়াদেরও কলেজে আসার উপরেও সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ভাবে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হলে, যাবতীয় সমস্যার সমাধান অনেকটাই সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>