২৬ জুন পর্যন্ত স্কুল ছুটি, অনলাইনেই চলবে ক্লাস! দুশ্চিন্তা বেসরকারি স্কুলে

২৬ জুন পর্যন্ত স্কুল ছুটি, অনলাইনেই চলবে ক্লাস! দুশ্চিন্তা বেসরকারি স্কুলে

 

কলকাতা: বর্ধিত গরমের ছুটিতে অনলাইন ক্লাসের দিকেই হাঁটছে বেসরকারি স্কুলগুলি। বর্ষা এসে গিয়েছে। তবু রাজ্যে গরমের ছুটি ২৬ জুন পর্যন্ত চলবে। এই বিষয়ে আর নতুন কোনও সিদ্ধান্ত নিতে নারাজ রাজ্য সরকার। বেসরকারি স্কুলগুলিকেও অনুরোধ করা হয়েছে ২৬ জুন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে। এই অবস্থায় সরকারি সিদ্ধান্ত মানা ছাড়া গতি নেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির। তবে এতদিন স্কুল বন্ধ রাখায় দুশ্চিন্তা বাড়ছে। অভিভাবকদের সঙ্গে ফের মতবিরোধ হতে পারে স্কুল কর্তৃপক্ষদের।

মে মাস থেকে রাজ্যে শুরু হয়েছে গরমের ছুটি। প্রায় দু মাস রাজ্য সরকার গরমের ছুটির কথা ঘোষণা করেছে। সরকারি, সরকার পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলি সম্পূর্ণ বন্ধ। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিও যাতে বন্ধ থাকে, সেজন্য নবান্ন থেকে বার্তা দেওয়া হয়। দেড় মাসের গরমের ছুটি প্রথমে মানতে চায়নি বহু বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নবান্ন থেকে এরপর বার্তা দেওয়া হয় স্কুল বন্ধ রাখতেই হবে। ফলে গরমের ছুটি ঘোষণা করা হয়।

এবার আরও ১১ দিন বাড়ানো হল গরমের ছুটি। কিন্তু এই ছুটি নিয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি। গতবার নবান্ন থেকে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাপ দেওয়া হয়েছিল স্কুল বন্ধ রাখার জন্য। এবার তাই পুরনো ঘটনাকে আর ফিরিয়ে আনতে চাইছে না বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ২৬ তারিখ পর্যন্ত স্কুল বন্ধ থাকার পথেই তারা হাঁটছে। তবে অফলাইনের বদলে এই ১১ দিন অনলাইনে পড়াশোনা হবে। বলে রাখা ভালো, মে মাসের নির্দিষ্ট কিছুদিন বহু স্কুলেই অনলাইন পঠনপাঠন হয়েছে।

সাধারণত বেসরকারি স্কুলগুলিতে এক মাস গরমের ছুটি দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট দিনেই স্কুল গরমের ছুটি দিয়েছে। তার আগে পর্যন্ত অনলাইনে চলেছে ক্লাস। কিন্তু এত অনলাইন ক্লাস করাতেও তৈরি হচ্ছে সমস্যা। বেসরকারি স্কুলের অর্থ আসে পড়ুয়াদের ফিজ থেকে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন সেখান থেকেই হয়। এছাড়াও স্কুলের উন্নতি ও অন্যান্য খরচের জন্য টাকা বরাদ্দ থাকে। প্রায় দুমাস স্কুল বন্ধ থাকলে অভিবাবকরা মাইনে নাও দিতে চাইতে পারেন। অনলাইনে ক্লাস হয়েছে। তাই স্কুলের ফিজ কেন দেওয়া হবে? এই প্রশ্ন ওঠা অবাস্তব নয়। এর আগেও এই বিষয়ে আদালত পর্যন্ত মামলা গড়িয়েছিল। স্কুল মেন্টেনেন্স- এর জন্য টাকা বরাদ্দ থাকে ছাত্রছাত্রীদের ফিজ থেকে। অভিভাবকরা সেই টাকা দিতে নাই চাইতে পারেন।

স্কুলে আসেনি পড়ুয়ারা। তাহলে কি প্রয়োজন টাকা দেওয়ার? এই প্রশ্ন স্বভাবতই উঠছে। রাজ্যের অনেক স্কুল সেন্ট্রাল এসি। অনেক স্কুলে ক্লাস ঘরে এসি চলে। সেখানে গরমের কোনও সমস্যা হয় না। স্কুল বন্ধ থাকলে সেই সব টাকা না দিতে চাইতে পারেন অভিভাবকরা। বেসরকারি স্কুলের ফিজ যথেষ্ট বেশি। করোনা পরবর্তী সময়ে আর্থিক সমস্যার মধ্যে অনেক পরিবার থাকছে। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে কোথাও স্কুলগুলিতে নতুন করে অভিভাবকদের সঙ্গে মনোমালিন্য তৈরি হতে পারে। এই আশঙ্কা করা হচ্ছে।

শুধু তাই নয়, জুন মাসের শেষে অনেক স্কুলে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। জুলাইতেও চলে পরীক্ষা। স্কুল বন্ধ থাকলে সেই পরীক্ষার সময় পিছোতে হবে। তাই স্কুলে পড়ানো সময়সীমা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে। কোন সময়ে সম্পূর্ণ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা যেতে পারে? তাই নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে স্কুলের ফিস নিয়ে সমস্যা দেখা দিলে কি হবে! সেক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সম্পূর্ণ বেতন দিত সমস্যা হতে পারে। অনলাইন ক্লাসের ভবিষ্যত কতটা রয়েছে। প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − eleven =