শক্তিগড়: অভাবের সংসারে বেড়ে ওঠা৷ মাঝপথেই পড়াশোনা বন্ধ করতে হয়েছিল তাঁকে৷ তার পর কেটে গিয়েছে অনেকগুলো বছর। অবশেষে এমএ পাশ মেয়ের অনুপ্রেরণায় চলতি বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন আয়েশা বেগম। শুক্রবার প্রকাশিত হয় মাধ্যমিকের ফলাফল। তাতে ৩৮৫ নম্বর পেয়ে পাশ করেন স্কুলছুট মা আয়েশা। শুধু তাই নয়, মায়ের সঙ্গে এবছর পরীক্ষায় বসেছিল ছেলে শেখ পারভেজ আলমও। তিনি ভালোভাবে উত্তীর্ণ হন পরীক্ষায়৷ পারভেজের প্রাপ্ত নম্বর ৪৬২৷
পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড় থানার ঘাটশিলা গ্রামের বাসিন্দা আয়েশা বেগম। তাঁর স্বামী শেখ সাইফুল আলম চাষবাস করে সংসার চালান। স্বামীর পাশে দাঁড়াতে আয়েশা নিজে আইসিডিএসে সহায়িকার কাজ করেন। অভাবের সংসার৷ দুই সন্তানের লেখাপড়া চালানো তাঁদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। বোন ফিরদৌসি যাতে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন, তার জন্য ছ’বছর আগে লেখাপড়ায় ইতি টানতে হয়েছিল পারভেজকে। দাদার পড়াশোনা শেষ করতে না পারার আক্ষেপটা থেকেই গিয়েছিল ফিরদৌসির মনে। তাই নিজে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি মা ও দাদাকেও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেন তিনি। পরে মা ও দাদাকে ঘাটশিলা সিদ্দিকীয়া সিনিয়ার হাই মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেন ফিরদৌসি। শুরু হয় তাঁদের পড়াশোনা৷
এই বছর সেখানে থেকেই এক সঙ্গে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন মা-ছেলে। প্রথমবারেই সফল তাঁরা৷ মা ও দাদার সাফল্যে গর্বিত ফিরদৌসি। ছেলে ও স্ত্রী একসঙ্গে মাধ্যমিক পাশ করায় খুশি সাইফুল আলমও। তাঁর কথায়, ‘আমার ছেলে ও স্ত্রী একটা দৃষ্টান্ত তৈরি করল।’
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>