ভোটারদের প্রলোভন দেখালেই অভিযুক্তকে জেলে ভরার নির্দেশ

বালুরঘাট: রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী ও তাদের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা যদি ভোটারদের মধ্যে কোনও ভাবে ভয়ভীতি তৈরি করলে, অথবা ভোট দিতে প্রলোভন দেখায়, তাহলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জেল ও জরিমানর নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশনের এহেন নির্দেশ পেতেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার প্রশাসনের তরফে জেলাজুড়ে ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি ও রাজনৈতিক দলগুলিকে সতর্কতা করার কাজ

ভোটারদের প্রলোভন দেখালেই অভিযুক্তকে জেলে ভরার নির্দেশ

বালুরঘাট: রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী ও তাদের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা যদি ভোটারদের মধ্যে কোনও ভাবে ভয়ভীতি তৈরি করলে, অথবা ভোট দিতে প্রলোভন দেখায়, তাহলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জেল ও জরিমানর নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের।

নির্বাচন কমিশনের এহেন নির্দেশ পেতেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার প্রশাসনের তরফে জেলাজুড়ে ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি ও রাজনৈতিক দলগুলিকে সতর্কতা করার কাজ শুরু হয়েছে। লিফলেট, মাইকিং করে শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র দিনরাত এনিয়ে প্রচার চলছে। সুসজ্জিত ট্যাবলোর মাধ্যমে এই প্রচার করা হচ্ছে। অন্য দিকে ভোটদাতাদের নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে সচেতন করতে খন শিল্পীদের গান, নাচ ও নাটকের মাধ্যমে প্রচার চালানোর পরিকল্পনাও জেলা নির্বাচন দপ্তর নিয়েছে। ইতিমধ্যেই খন শিল্পীরা পালা লেখার কাজ শুরু করে নিয়েছেন।

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তথ্য সাংস্কৃতিক আধিকারিক শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, ভোটদাতাদের সচেতনতা বাড়াতে জেলা নির্বাচন দপ্তরের তরফে নানা মাধ্যমে প্রচার চালানো হচ্ছে। কোন ব্যক্তি ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করলে বা ভোটদাতাদের কোনও রূপ প্রলোভন দেখানোর অভিযোগ জমা পড়লে আমরা কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এক্ষেত্রে অভিযোগ প্রমাণিত হলে হাজতবাসের পাশাপাশি আর্থিক জরিমানাও ধার্য করা হবে।

জেলা নির্বাচন দপ্তরের এই প্রচারে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যেও আলোড়ন পড়েছে। বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অর্পিতা ঘোষ বলেন, ভোটদাতাদের প্রলোভন দেওয়ার কোনও প্রয়োজন আমাদের নেই। রাজ্য সরকারের সারা বছর মানুষের পাশে থেকেছে। এতেই আমরা মানুষের আশীর্বাদ পাব। বিজেপি সরকার মানুষের জন্য কী কাজ করেছে তা সকলে জানে। ভোট দাতাদের প্রলোভন দেখানো বা ভয়ভীতি প্রদর্শনের প্রয়োজন তাদের পড়তে পারে। আরএসপির প্রার্থী রণেন বর্মন বলেন, তৃণমূল ও বিজেপি আকণ্ঠ দুর্নীতিতে ডুবে রয়েছে। সেই টাকা এখন তারা ভোটারদের মধ্যে বিলি করবার চেষ্টা চালাবে। এব্যাপারে জেলা নির্বাচন দপ্তরের বিশেষ নজরদারি রাখা প্রয়োজন। আমাদের নজরে এলেই এনিয়ে আমরা কমিশনে নালিশ জানাব।

বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মানস সরকার বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল যেভাবে বুথে বুথে মানুষকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি তৈরি করে ভোট করিয়েছেন তা জেলাবাসী প্রত্যক্ষ করেছেন। পঞ্চায়েত ভোটের গণনা পর্বেও কিছু ক্ষেত্রে কী রকম জালিয়াতি হয়েছে তাও জেলার মানুষ দেখেছে। লোকসভা নির্বাচনেও সেসব পথ নেওয়ার চেষ্টাই ওরা করবে। কমিশনের আগাম এই উদ্যোগে আমরা খুশি। কমিশনকে আরও সজাগ থাকতে হবে।

বিভিন্ন নির্বাচনেই ভোটগ্রহণ পর্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থেকে দুষ্কৃতীদের দাপাদাপি নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগ থাকে। ভোট দিতে যাওয়ার পথে ভোটদাতাদের রাস্তা থেকে ফিরিয়ে দেওয়া, ভোট দিতে না যাওয়ার জন্য বা নির্দিষ্ট প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য আগে থেকে হাটেবাজারে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয় দেখানোর পালাও চলতে থাকে। তবে এবার কমিশনের তৎপরতায় সাধারণ ভোটদাতারা অনেকটাই বল-ভরসা পাচ্ছেন। অনেকেই মনে করছেন এবার নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে কমিশন যেভাবে ঝাঁপিয়েছে তাতে গণতন্ত্রকে হত্যা করা বা টাকা দিয়ে ভোট কেনার সুযোগ দুষ্কৃতীরা পাবে না। নির্বাচন কমিশন কড়া নির্দেশ দিয়েছে কোনওভাবে ভোটদাতাদের প্রলোভন দেওয়া হলে বা তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হলে তার বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। এতে অভিযুক্তের জেল জরিমানা দুইই হবে। কেন্দ্রীয় বাহিনী ও কমিশনের আধিকারিরা সব কিছুর উপরই নজর রাখছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − six =