তারকেশ্বর: তারকেশ্বরে চৈত্র মাসের গাজন মেলায় শনিবার ছিল নীলাবতীর বিয়ে অর্থাৎ শিব-পার্বতীর বিয়ের দিন। শক্তি ও শিবের বিয়ের দিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার ভক্ত এসে ভিড় করেছিলেন তারকেশ্বরে। শিবের বিয়ে তাই এইদিন ভোগ হয় না মন্দিরে। চৈত্রের শেষ দিনে ছাতু, ছোলা ভেজানো, টক দই ও বৈশাখের প্রথম দিন পায়েস রান্না করে দেওয়া হয় ভোগ।
সারাদিন বিশেষ পূজার্চনার মধ্যে দিয়ে চলে এই শিব-পার্বতীর বিয়ের অনুষ্ঠান। তারকেশ্বর মঠের মোহন্ত মহারাজ পালকি করে মন্দিরে এসে বিশেষ পূজার্চনা করেন এইদিন। তারকেশ্বর মন্দিরের পুরোহিত সন্দীপ চক্রবর্তী নীলের ব্রত সম্পর্কে বলেন, নীল হচ্ছে শিবের অপর নাম। এদিনটা হল শিব আর পার্বতীর বিবাহের দিন, নীলাবতীর বিয়ে। আজকের দিনে শিব ও শক্তি একসঙ্গে হয়েছিলেন। গোটা জগৎ সংসারে তারকাসুরের অত্যাচার থেকে বাঁচতে উপায় একটাই ছিল—শিবের সন্তান চাই। শিবপুত্রের হাতেই হত্যা হবে তারকাসুর এবং জগৎ সংসার অসুরের অত্যাচার থেকে মুক্ত হবে। শিব যোগী পুরুষ। সতীর দেহ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে যোগে রয়েছেন শিব। পার্বতী তপস্যা করে চলেছেন শিবকে লাভ করার জন্য। কামদেব ও রতিকে পাঠানো হয়েছিল শিবের তপস্যা ভঙ্গ করার জন্য। শিব কামদেবকে ভস্ম করে দিয়েছিলেন। শিবকে যোগ থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য ভক্তরা সন্ন্যাসী হতে শুরু করলেন। বললেন, বাবা যদি না বিবাহ করে আমরাও সন্ন্যাস গ্রহণ করব। এরপর থেকেই চৈত্র মাসে সন্ন্যাস নেওয়ার প্রচলন শুরু হল। এরপর ভক্তরা না খেয়ে ও ঝাঁপ দিয়ে নিজেদের শেষ করার চেষ্টা করে। আজও এই ঝাঁপ তারকেশ্বর মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয়।