স্ত্রী, পুত্র-সহ শিক্ষককে কুপিয়ে খুন, ‘তৃতীয়’ ব্যক্তির খোঁজ পুলিশের

মুর্শিদাবাদ: স্ত্রী-পুত্রসহ স্কুল শিক্ষককে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড়৷ সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ নাকি স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন এই নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা৷ তবে পুলিশের অনুমান, সপরিবারে শিক্ষককে খুনের পিছনে পরিচিত কারোর হাত রয়েছে৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয়দের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন ওই শিক্ষক৷ ঋণের টাকা ফেরত দেওয়া ঘিরে টানাপোড়েন হয়ে থাকতে

imagesmissing

মুর্শিদাবাদ: স্ত্রী-পুত্রসহ স্কুল শিক্ষককে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড়৷ সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ নাকি স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন এই নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা৷ তবে পুলিশের অনুমান, সপরিবারে শিক্ষককে খুনের পিছনে পরিচিত কারোর হাত রয়েছে৷

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয়দের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন ওই শিক্ষক৷ ঋণের টাকা ফেরত দেওয়া ঘিরে টানাপোড়েন হয়ে থাকতে পারে৷ স্থানীয়দের আশঙ্কা, ঋণের টাকা না মেটানোই খুব সম্ভবত শিক্ষককে খুন করা হয়ে থাকতে পারে৷ ঋণের পাশাপাশি শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পালের সঙ্গে তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিউটি মণ্ডলের সঙ্গেও সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল বলেও অনেকে মনে করছেন৷ তাদের সম্পর্কে তৃতীয় কোনও ব্যক্তি ছিলেন কি না তা নিয়েও শুরু হয়েছে পুলিশি তদন্ত‌৷ তদন্তে বন্ধু প্রকাশ পালের ঘনিষ্ঠ বন্ধুর খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ৷ ইতিমধ্যেই শিক্ষকের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেছে পুলিশ৷ তবে ঘটনার দু’দিন পরও কাইকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ৷

বজয়া দশমীর দিন নিজের বাড়িতে রহস্যজনকভাবে খুন হন স্কুল শিক্ষক ও তাঁর পরিবার৷ মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের সদরঘাট লাগোয়া লেবুবাগান এলাকায় স্কুল শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিউটি পাল, তাদের ৫ বছরের একমাত্র সন্তান অঙ্গনের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ইতিমধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়৷ সপরিবারে শিক্ষকের খুনের প্রতিবাদে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন শিক্ষকদের একাংশ৷

পুলিশ সূত্রে খবর, শিক্ষকের বাড়িতে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে৷ আলমারি অবিন্যস্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়ায় খুনের মোটিভ ঙিরে জারি হয়েছে ধোঁয়াশা৷ পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পারিবারিক শত্রুতার কারণে তাঁদের নিশংস ভাবে খুন করে করা হয়ে থাকতে পারে৷ যেভাবে শিক্ষা ও তাঁর স্ত্রী-পুত্রকে যে ভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে, তাঁর পিছনে পেশাদারী খুনিদের যোগাযোগ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ৷ ইতিমধ্যেই নিহত শিক্ষকের বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেছে পুলিশ৷ তবে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ৷ জানা গিয়েছে, সাহাপুর প্রাথমিক স্কুলের ২০০৫ সালে শিক্ষকতার চাকরি যোগদান করেন বন্ধুপ্রকাশ৷ বিয়ে করেন ৬ বছর আগে৷

সপরিবারে শিক্ষককে নিশংসভাবে খুনের প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন শিক্ষকদের একাংশ৷ এবিষয়ে শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, ‘‘শারদোৎসবের শেষে যখন বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর্ব চলছে তখন মুর্শিদাবাদে প্রাথমিক শিক্ষক ও তাঁর স্ত্রী-পুত্রকে কুপিয়ে খুন করার ঘটনায় আমরা শিহরিত৷ কী কারণে এই নৃশংস খুন আমরা জানি না৷ কিন্তু যে কোনও অজুহাতে যেভাবে মানুষ মানুষকে খুনের নেশায় মেতে উঠেছে তা মনুষ্যসমাজকে লজ্জা দেয়৷ পশুদের থেকে নৃশংস হয়ে উঠেছে মানুষ! অতি দ্রুত এই ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি করছি৷ একইভাবে নবমীর দিন রাতে ঠাকুর দেখতে গিয়ে ১১ বছরের শিশু কন্যা নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর পাওয়া যায় তার লাশ! একদিকে কুমারী পুজো চলছে, আর এক দিকে এমন বীভৎস ঘটনা সমান্তরালে চলছে৷ বারবার ধরনের ঘটনা প্রমাণ করে প্রশাসন যথেষ্ট সক্রিয় নয়৷ অপরাধীদের কঠোর সাজা দেওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতা বা টালবাহানা এইসব ঘটনাকে ইন্ধন দিচ্ছে৷ ক্রমাগত দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হচ্ছে মনুষ্যসমাজ৷ অবিলম্বে কড়া হাতে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করার দাবি জানাচ্ছি রাজ্য প্রশাসন তথা রাজ্য সরকারের কাছে৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *