কলকাতা: স্নান করতে পা পিছলে গভীর কুয়োয় পড় গিয়েছিলেন এক যুবক৷ ৪০ ফুট কুয়োয় পড়ে যুবকের মৃত্যু হলেও দেহ তুলতে কার্যত ব্যর্থ পুলিশ, দমকল, বিপর্যয় মোকাবিলা দল৷ ঢালঢোল পিটিয়ে লোক-লস্কর লাগিয়ে, যন্ত্রপাতি আনিয়েও দেহ উদ্ধার করার কাজ শুরু হলেও কাজে আসেনি কোনও পদ্ধতি৷ কিন্তু, পুলিশ, দমকল, বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে হেলায় হারিয়ে একা হাতে দেহ তুলে নজির গড়লেন স্থানীয় এক কুয়ো মিস্ত্রি মেঘনাদ সর্দার৷
শুক্রবার দুপুরে দুর্ঘটনা ঘটলেও মৃতদেহ উদ্ধারে গিয়ে পুরোপুরি ব্যর্থ হয় কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী৷ দমকলও৷ ডুবুরি নামানো হলেও কাজে আসেনি৷ ঘণ্টার পর ঘণ্টা তল্লাশি চালালেও উদ্ধার করা যায়নি দেহ৷ রাত দশটার পর তল্লাশি পর্ব স্থগিত রাখা হয়৷ আজ শনিবার ফের উদ্ধার কাজ শুরু হয়৷ কিন্তু, তাতেও প্রশিক্ষিত কর্মীরা ব্যর্থ৷ পরে দেবদূতের মতো এগিয়ে আসেন এক কুয়ো মিস্ত্রি৷ খালি খাতে নামেন সেই কুয়োয়৷ কুয়োয় নেমে ওই যুবকের দেহ তুলে আনেন ওই কুয়ো মিস্ত্রি৷ দেহ উদ্ধার করে আনায় ওই কুয়ো মিস্ত্রিকে আর্থিক সহযোগিতার ঘোষণা পুলিশের৷ সঙ্গে সিভিক ভলেন্টিয়ারের চাকরি দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷
রিজেন্ট পার্ক থানার ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সোনালি পার্কে বাপি সরকার নামের এক যুবক শৌচাগারে স্নান করতে যাওয়ার সময় কুয়োয় পড়ে যান৷ দীর্ঘক্ষণ ছটফট করার পর কোনও সাহায্য না পেয়ে মৃত্যু হয় ওই যুবকের৷ পরে দমকল, বিপর্যয় দল চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়৷ পরিত্রাতার ভূমিকা নেন স্থানীয় এক কুয়ো মিস্ত্রি৷
মৃত যুবকের পরিবারের অভিযোগ, রাজ্যের বাহিনী উদ্ধারে নামলেও শুক্রবার ডাকা হয়েছিল ওই কুয়ো মিস্ত্রিকে৷ কিন্তু তাকে কাজে লাগানো হয়নি বলে অভিযোগ পরিবারের৷ আজ সকালে সমস্ত আশা শেষ হওয়ার পর ওই কুয়ো মিস্ত্রিকে নামানো হয়৷ মাত্র দু’ঘণ্টার চেষ্টায় ওই কুয়ো মিস্ত্রি দেহ তুলে আনেন৷ আর তাতেই ক্ষেভে ফেটে পড়ে মৃতের পরিবার৷
কুয়ো মিস্ত্রি মেঘনাদ সর্দারকে সিভিক ভলেন্টিয়ারের চাকরি দেওয়া হচ্ছে শুনে খুশি স্থানীয়রা৷ তবে, প্রশ্ন উঠছে, সরকারের টাকায় বেতন, প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরও কেন কেন ব্যর্থ বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী? এই ব্যর্থতা যে প্রথম, তা নয়৷ শহর কলকাতার উড়ালপুল বিপর্যয়ের মতো দু’টি ঘটনায় ধরাশায়ী হতে হয়েছে বিপর্যয় বাহিনীকে৷ এবার সাধারণ দেহ তোলার ক্ষেত্রেও ফের একবার নিজেদের দক্ষতা কার্যত প্রমাণ দিল রাজ্যের বাহিনী৷