বারাসত: বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে ঘটল বিস্ফোরণ৷ নৈহাটির গঙ্গার পাড়ে বিস্ফোরণের অভিঘাতে কেঁপে উঠল চুঁচুড়া৷ নৈহাটিতে বাজেয়াপ্ত বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে তীব্র বিস্ফোরণ ঘটে৷ নৈহাটিতে গঙ্গার পাড়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় কেঁপে ওঠে চুঁচুড়া পুরসভা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা৷ গুরুতর ভাবে জখম হয়েছেন দুই পুলিশ কর্মী৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ ঘটনায় এবার মুখ খুললেন বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর৷
টুইটে বিস্ফোরণের ছবি প্রকাশ করে রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘‘এই বিস্ফোরণ কল্পনা করা যাচ্ছে না৷ এটি গুরুতর বিষয়৷ বিস্ফোরণের তীব্রতা এবং যে কারণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা বিবেচনা করে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক৷ বিশেষজ্ঞদের দিয়ে তদন্ত হওয়া জরুরি৷ বিশেষজ্ঞরা বিষয়টি সন্ধান করতে পারেন৷ এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের গুরুত্ব দেওয়া উচিত৷’’
The explosion leaves nothing to imagination. It calls for thorough probe in view of its seriousness, intensity and damage caused. Only expert investigation can unearth issues involved. This ominous development should be eye opener for law enforcing and regulatory regime in State. pic.twitter.com/4mD0nHnkCg
— Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) January 9, 2020
অন্যদিকে, আজ সন্ধ্যায় চুঁচুড়ায় বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়৷ ক্ষতিগ্রস্তদের কথা বলার পর সংবাদমাধ্যমে লকেট বলেন, ‘‘বাংলায় জিহাদি কার্যকলাপ চলছে৷ এই ঘটনা এনআইএ কে দিয়ে তদন্ত করানো উচিত৷ আমি লোকসভায় এই নিয়ে দাবি তুলব৷ আমরা খাগড়াগড় বিস্ফোরণ দেখেছি৷ এছাও পিংলা-সহ বাংলায় বিভিন্ন প্রান্তে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা দেখছি৷ আমি চাইছি, নৈহাটির ঘটনায় তদন্ত করুক এনআইএ৷ এর পেছনে বড় চক্রান্ত রয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গকে বোমা শিল্পে পরিণত করেছেন৷ মুখ্যমন্ত্রী যদি রাজ্যে বোমা শিল্প গড়ে তুলতে চায়, তাহলে কেন সেই বোমা গুলিকে নিষ্ক্রিয় করার জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পুলিশকে পাঠানোর ব্যবস্থা করল না৷ কীভাবে এত বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক এল? এর তদন্ত হওয়া উচিত৷’’
সাংবাদিক বৈঠক করে মোহাম্মদ সেলিমের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় পুলিশকে বলে দিয়েছেন বোমা ও বাজি দু’টিকে এক করে দেখতে৷ আজ পুলিশের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণে এত বড় বিস্ফোরণ ঘটে গেল৷ বেআইনি বাজি-বোমা তৈরির কারখানা বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি৷ কারণ এর পেছনে তৃণমূলের নেতারা জড়িত৷ আজ এই ঘটনা আরও একবার প্রমাণ করল, তৃণমূল ও পুলিশের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা৷
ভেঙে গিয়েছে বাড়ির জানালার কাঁচ৷ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে চুঁচুড়া পুরভবন -সহ বেশ কয়েকটি বাড়ি৷ প্রতিবাদে পথ অবরোধ চঁচুড়ার গঙ্গার পাড়ের বাসিন্দাদের৷ অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ বিরুদ্ধে চড়াও নৈহাটির বাসিন্দাদের৷ পুলিশের দু’টি গাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা৷ বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল নৈহাটি ও চুঁচুড়ার বেশিরভাগ এলাকা কেঁপে ওঠে৷ ছড়িয়ে পড়ে তীব্র আতঙ্ক৷ এমন কী বিস্ফোরক ছিল, যাতে কেঁপে উঠল গঙ্গার দুই পাড়? বাজি না আইইডি? নাকি পরমাণু বোমা? প্রশ্ন তুলছে জনতা৷
বাজি নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছিল গত তিন চারদিন ধরে৷ এরকম দাবি গঙ্গার দু’পারের বাসিন্দাদের৷ গত ৩ জানুয়ারি নৈহাটি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটে৷ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল চার জনের৷ এই ঘটনার পর পুলিশ তল্লাশি শুরু করে৷ অভিযানে নেমে নৈহাটির রামঘাট ও চারঘাট এলাকা থেকে বাজেয়াপ্ত হয় বিপুল বিস্ফোরক৷ বাজি নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে আজ বিস্ফোরণ ঘটে৷ নৈহাটির রামঘাটের গঙ্গার পাড়ে বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে নৈহাটি ও চুঁচুড়া৷ চুঁচুড়া বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন চন্দননগরের সিপি৷ শুরু হয়েছে পুলিশি তদন্ত৷