কলকাতা: ২০১৯ শেষ হয়েছিল পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের মতো অভূতপূর্ব মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী রেখে৷ ২০২০ অর্থাৎ নতুন বছরের শুরুটাও হতে চলেছে আরও একটি মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী রেখে৷ আজ বছরের প্রথম চন্দ্রগ্রহণের সাক্ষী হতে চলেছে ভারত৷ এটি আংশিক (খন্ডগ্রাস) চন্দ্রগ্রহণ৷
এর বিশেষত্ব হল, চন্দ্র গ্রহণের সময় পৃথিবী সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে চলে আসে এবং সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদ একই সরলরেখায় অবস্থান করে৷ খন্ডগ্রাস চন্দ্রগ্রহণের বিশেষত্ব হল, এই গ্রহণ মোট চারটি ধাপে হয়৷ গ্রহণের শুরুতে ওইসময় পৃথিবীর যেসমস্ত জায়গাগুলিতে চাঁদ দিগন্তরেখার উপরে থাকবে, সেই সব স্থান থেকে দেখতে পাওয়া চাঁদের উজ্জ্বলতা ক্রমশ কমবে৷ একে বলে উপচ্চ্ছায়া-গ্ৰহণ(খন্ড গ্রাস বা পেনাম্ব্রাল)৷ উজ্জ্বলতা কম হওয়ার কারণ, সূর্যের সব অংশ থেকে চাঁদ আলো পাবে না৷ এরপর ধীরে ধীরে চাঁদ পৃথিবীর প্রচ্ছায়া শঙ্কুর (পেনাম্ব্রাল কোন ) দিকে যত এগোতে থাকবে, ততই তার উজ্জ্বলতা কমবে৷
চাঁদ যখন প্রচ্ছায়া-শঙ্কু স্পর্শ করবে তখনই শুরু চাঁদের খন্ডগ্রাস(আংশিক গ্রহণ)৷ আজ ১০ জানুয়ারি রাত ১০:৩৭ থেকে গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হবে সম্পন্ন হবে পরদিন অর্থাৎ ১১ জানুয়ারি বেলা ২:৪২ পর্যন্ত৷ এই চন্দ্রগ্রহণের স্থায়িত্ব ২৪ ঘণ্টারও বেশি হবে৷
সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ মিলিয়ে সাধারণত একবছরে সবথেকে বেশি ৭টি গ্রহন ঘটতে পারে৷ আর সবথেকে কম ৪টি৷ তবে বছরে ৭টি গ্রহণ বিরল বলা যায়৷ জ্যোতির্বিজ্ঞান অনুসারে শেষবার একই বছরে ৭টি গ্রহণ ঘটেছিল ১৯৮২ সালে৷ সেক্ষেত্রে এবছর অর্থাৎ ২০২০-কে উল্লেখযোগ্য বলা যায়৷ কারণ এবছর সবমিলিয়ে ৬টি গ্রহণের ঘটনা ঘটতে চলেছে৷ এরমধ্যে রয়েছে দুটি সূর্যগ্রহণ ও চারটি চন্দ্রগ্রহণ৷
এবছরের প্রথম এবং পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ হবে ২১ জুন৷ একটি সূক্ষ্ম সূর্যগ্রহণ (অ্যানুয়াল সোলার এক্লিপ্স) যেখানে 'রিং অফ ফায়ার' দেখা যাবে৷ গ্রহণ চলবে ভারতীয় সময়, সকাল ৯:১৫ থেকে দুপুর ৩:০৪ পর্যন্ত৷ এই সূর্যগ্রহণ দৃশ্যমান হবে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ, এশিয়া, উত্তর অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা, প্রশান্ত মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগর জুড়ে৷
দ্বিতীয় পূর্ণসূর্যগ্রহণটি হবে বছরের শেষে অর্থাৎ ১৪ ডিসেম্বর৷ গ্রহণ চলবে ভারতীয় সময়, সন্ধ্যে ৭:০৩ থেকে রাত ১২:২২ পর্যন্ত৷ এটি দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, প্রশান্ত মহাসাগরীয়, আটলান্টিক, ভারত মহাসাগর এবং এন্টার্কটিকা জুড়ে দৃশ্যমান হবে৷
আজ ১০ জানুয়ারির পর ২০২০-তে বাকি তিনটি চন্দ্র গ্রহণ হবে যথাক্রমে- ৫ জুন (রাত ১১:১৫ থেকে ৬ জুন ২:৩৪), এই গ্রহণ দৃশ্যমান হবে ভারত সহ এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়া থেকে৷
৫ জুলাই (সকাল ৮:৩৭ থেকে ১১:২২পর্যন্ত) ৷ এই গ্রহণ দৃশ্যমান হবে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ, আমেরিকা ও আফ্রিকা থেকে৷ ৩০ নভেম্বর (০১:০২ থেকে সন্ধ্যা ৫:২৩ পর্যন্ত) এই গ্রহণ দৃশ্যমান হবে ভারত সহ এশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগর, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে৷