NRC-CAA-র ছায়া এবার কলকাতা পুরনিগমের মাসিক অধিবেশনে!

NRC-CAA-র ছায়া এবার কলকাতা পুরনিগমের মাসিক অধিবেশনে!

কলকাতা: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি আন্দোলনের উত্তাপ এবার কলকাতা পুর নিগমের মাসিক অধিবেশনে।পুরনিগমের বহির্ভুত বিষয় বলে এই ইস্যুতে আনা বামেদের প্রস্তাব খারিজ হয়ে গিয়েছিল বিগত মাসের পুর অধিবেশনে।কিন্তু এবার শাসক দলের তরফে ওই একই প্রস্তাব আলোচনার জন্য গৃহীত হওয়ায় গোলমাল বাঁধে।

তৃণমূল কংগ্রেসের পুর মুখ্য সচেতক রত্না শুর ও কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায় সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে অধিবেশনে আলোচনা প্রস্তাব আনেন। চেয়ারম্যান ওই প্রস্তাব আলোচনার  জন্য গ্রহণ করায় বাম কাউন্সিলররা প্রথমে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখান। এরপর অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করে পুরভবনে মিছিল করেন। বাম পুর দলনেত্রী রত্না রায় মজুমদার অভিযোগ করেন, চেয়ারপার্সেনের এরকম সিদ্ধান্তে তাঁর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। রত্না শুর তাঁর প্রস্তাবে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে নাগরিকত্বের জন্য  কি কি নথি প্রয়োজন ও কি করনীয় সেই বিষয়ে মেয়রকে শহরবাসীকে আশস্ত করতে বলেন। এই বিষয়টি উল্লেখ করে বাম পুর দলনেত্রী অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রী যতই প্রকাশ্যে এনআরসি, এনপিআর, সিএএ-এর বিরুদ্ধে সরব হন না কেন তাঁর দল আদতে এর পক্ষে।

এদিকে বামেদের আনা এই অভিযোগ সম্পূর্ন খন্ডন করে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সবার আগে এই আইনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছেন। এই নিয়ে রাজ্যের মানুষ প্রবল উদ্বেগে রয়েছেন। পূর্ব পুরুষদের জন্ম শংসাপত্র যোগাড় করার জন্য প্রতিদিনই পুরভবনে লোক ভিড় করছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীর পাশে আছেন। তিনি পুরনিগমের প্রতিটি কাউন্সিলরকে তাঁর এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষকে অযথা উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ দিতে বলেন এদিকে কলকাতা পুর এলাকার বাইরের বাসিন্দা হওয়া সত্বেও এক বৃদ্ধাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।শনিবার পুরভবনে টক টু মেয়র  কর্মসূচীতে উত্তর ২৪ পরগণার কামারহাটি এলাকার এক অসীতিপর বৃদ্ধা দীর্ঘ ৭ বছর ধরে তাঁর মালিকানাধীন একটি দোকান ঘরের ভাড়া পাচ্ছেন না এই মর্মে মেয়রের কাছে অভিযোগ জানান তাঁর এক নিকট আত্মীয়। কামারহাটি পুরনিগমের চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে এই অনাদায়ী ভাড়ী দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে মেয়র প্রতিশ্রুতি দেন।

অন্যদিকে, দক্ষিণ শহরতলীর ঠাকুরপুকুরে মহিলা সমাজসেবী সংগঠনের পরিচালিত একটি বৃদ্ধাশ্রম বাড়ির কোন দলিলপত্র ইত্যাদি না থাকলেও সমাজ কল্যাণকর কাজের জন্য মেয়র ফিরহাদ হাকিম ঐ বৃদ্ধাশ্রম বাড়িটির কর নির্ধারণ প্রক্রিয়ার কাজটি সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন।

এদিকে, দক্ষিণ কলকাতার প্রতিষ্ঠিত কালীমন্দিরের এক সাধু, মেয়রকে বিশেষ সমস্যার কথা জানালে, মেয়র সেই মন্দিরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন বলে তাঁকে প্রতিশ্রুতি দেন। এছাড়া আজ ফ্ল্যাট – বাড়ি সংক্রান্ত সমস্যা, জরাজীর্ণ রাস্তা, পুরনো বাড়ির দেওয়াল থেকে গজিয়ে ওঠা গাছের জন্য আসপাশের বাড়ির পরিবেশ জনিত সমস্যা, বেআইনী হকার সরিয়ে দেওয়ার আবেদন প্রভৃতি সমস্যা নিয়ে এদিন টক টু মেয়র কর্মসূচীতে ২৭জন নাগরিকের সমস্যা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দিশা দেখিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eight − five =