ওয়াশিংটন: ‘কাউ ডাং কেক’ ১০টি কেকের দাম ২.৯৯ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ২১৪টাকা৷ এই মরশুমে এমন কেক-এর কথা শুনে খাদ্যরসিক দের উৎসাহ দুগুন হতে বাধ্য৷ কারণ ব্যবসায়ীক লাভ তুলতে যেকোনো জিনিসের চটকদারি নাম আর সুদৃশ্য প্যাকেট হলেই হল৷ হুজুগে ক্রেতাদের সেটাই বশী পছন্দ৷ তাই হয়তো প্যাকেটের গায়ে সাবধান বাণী ‘হাতে তৈরি গোবরের কেক৷ এটা ধর্মীয় কাজের জন্যই ব্যবহার করা হবে৷ খাওয়ার জন্য নয়৷’ এটিকে ‘ভারতের প্রোডাক্ট’ বলেও উল্লেখ করা আছে৷
মৎস্যশুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি যে বিদেশের বাজারে দেদার বিক্রি হচ্ছেৎ এই গোবরের কেক বাংলায় যা ঘুঁটে বলেই স্বনামধন্য৷ আর নেট দুনিয়ায় এখন অনলাইনেই মিলছে এই ‘কাউ ডাং কেক’ ৷ ফ্লিপকার্ট কিংবা আমাজনে অর্ডার করলে ঘরে বসেই পেয়ে যাবেন এই কেক৷ সেই ঘুঁটে এবার বিদেশের বাজারেও এত জনপ্রিয় হয়ে উঠবে কে জানত? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির এডিসনের একটি দোকানে এই ঘুঁটের বিক্রি হচ্ছে দেখে সম্প্রতি সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ নজর কাড়ে৷ এর ধরন দেখে নেটিজেনদের অনেকেই আবার ‘কাউ ডাং কুকিজ’ নামটা সাজেস্ট করেছেন৷
ভারতের প্রোডাক্ট বলে উল্লেখ আছে৷ তাই আমেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয়দের মাটির টান থেকেই দেশীয় গরুর প্রতি দুর্বলতা৷ পাশাপাশি দেশীয় গরুর ক্ষেত্রে ধর্মীয় আবেগটাও কাজ করছে৷ প্রকৃতি সচেতনতা থেকেও ঘুঁটের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন অনেকেই৷
ঘুঁটে প্রাকৃতিক সারের কাজ করে, বাতাস পরিশুদ্ধ করে, যাগ-যজ্ঞের কাজে লাগে, জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়৷ সম্প্রতি ভারতের এক এনজিও সংস্থা গোবর থেকে কাগজও তৈরি করে ফেলেছে৷ আর এই কাগজ থেকে তৈরি করা হয়েছে সুন্দর সুন্দর ক্যালেন্ডারও যেখানে আছে প্রকৃতি সচেতনতা মূলক বার্তা৷ গোবরের এই চাহিদার কথা মাথায় রেখেই অনলাইন বিক্রেতারা এখন ঘুঁটের যোগানও দিচ্ছেন৷
তবে বর্তমানে ভারতের গোবলয়ের গোতত্ত্বগুলিও ঘেঁটে দেখার পর আমজনতার কাছে গোমাতার জনপ্রিয়তা যেভাবে বাড়ছে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়তো বিদেশেও সংক্রমণ ছড়িয়েছে৷ আর তাই ঘুঁটের আন্তর্জাতিক তকমা ভারতীয়দের কাছেও এর গ্রহনযোগ্যতা হয়তো আরও বাড়িয়ে তুলবে৷ সর্বোপরি ধার্মিক দিকটা একটু সরিয়ে দেখলে ঘুঁটের প্রাকৃতিক দিকটা কিন্তু সত্যিই ইতিবাচক ৷ তাই বড়দিনে রসনাতৃপ্তির জন্য রকমারি চকলেট, স্ট্রবেরী কেকের পাশাপাশি ‘কাউডাং কেকও’ তালিকায় রাখা যেতে পারে৷ অবশ্যই ‘খাওয়ার জন্য নয়৷’