পায়ে দড়ি বেঁধে টেনে হিঁচড়ে শিক্ষিকাকে মার, রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

পায়ে দড়ি বেঁধে টেনে হিঁচড়ে শিক্ষিকাকে মার, রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

কলকাতা :  এ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশ  পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধানের এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন , যে তাঁরা এলাকার কাউকেই বেয়াত করছেন না, উপরন্ত জায়গা জমি দখল করে কোথাও রাস্তা,আবার কোথাও বেআইনি নির্মাণ গড়ার অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরেই সরব হচ্ছেন জমির মালিকেরা। এর আগেও এইধরণের অভিযোগে মামলা হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। মামলাগুলোয়  পঞ্চায়েত প্রধানদের আদালতে ডেকেও পাঠানো হয়েছে।

মামলাকারীদের অভিযোগ , বাসিন্দাদের জমি দখল করে নিতেও কসুর করছেন না- সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান- উপপ্রধানরা। বাধা দিতে গেলে বা প্রতিবাদ করলে, বেধড়ক মার জুটছে বৈধ জমির মালিকদের।  এবার গতে বাঁধা সব শেকল ছিঁড়ে দিয়েছেন পঞ্চায়েতের এক উপপ্রধান। ছাত্র-ছাত্রীদের সামনেই তাঁদের স্কুল শিক্ষিকাকে শুধু মানসিকভাবে হেনস্থা করেই খ্যান্ত হয়নি তারা। ওই স্কুলশিক্ষিকার পায়ে দড়ি বেঁধে তাঁকে ৩০ ফুট টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে । শিক্ষিকা যখন রাস্তার ওপরে চেছড়ে যাচ্ছেন , ঠিক সেই সময় তাঁর মুখে,হাতে,পায়, পিঠে অনবরত পড়ছে লাঠির ঘা। তাঁকে বাঁচাতে এসে একই রকমভাবে আক্রান্ত ওই শিক্ষিকার বোনও। 

স্কুল শিক্ষিকাকে এইভাবে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে নন্দনপুরের উপপ্রধান তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা অমল দাসের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনা নিয়ে এক জনস্বার্থ  মামলায়, এবার রাজ্যের কাছে দ্রুত রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার প্রধান বিচারপতি খোট্টাথিল ভাস্কারণ নায়ার রাধাকৃষ্ণণ ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের নির্দেশ রাজ্যের লিগ্যাল এইড সার্ভিসেসের মেম্বার সেক্রেটারীকে এই ঘটনা সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করতে হবে। পাশাপাশি জেলা লিগ্যাল এইডকে বিষয়টি নিয়ে রাজ্যকে সাহায্য করতে হবে। 

মামালকারীর আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় এপ্রসঙ্গে বলেন, ' নিগৃহীত ওই মহিলা স্মৃতিকনা দাস বিজেপি সমর্থক এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর সায়ারাপুর কেএমবি হাইস্কুলের শিক্ষিকা তিনি। রাস্তা তৈরি করার জন্য তাঁর বাড়ির ২৪ ফুট জমি দখল করে নিয়েছে বলে পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে অভিযোগ। তিনি ১২ ফুট ছাড়ার প্রস্তাব দিলেও তাতে রাজি হননি নন্দনপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। এই নিয়ে তর্কাতর্কিতে রবিবার ওই পঞ্চায়েত উপপ্রধান এবং কয়েকজন তৃনমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে  স্মৃতিকনা দেবীকে প্রকাশ্যে মারতে মারতে বাড়ি থেকে টেনে-হিঁচড়ে রাস্তায় নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আদালতে আমরা স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা দায়ের করার আবেদন জানিয়েছি। তা মঞ্জুর করেছে হাইকোর্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *