কলকাতা: গর্জেও বর্ষাল না! রাজ্য বিধানসভায় ইতিহাস গড়ার ইঙ্গিত দিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর৷ কিন্তু রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেও বিধানসভার অন্দরে রাজ্যের নির্দিষ্ট করা ভাষণের বাইরে একটি শব্দ ব্যবহার করলেন না রাজ্যপাল৷ উল্টে নিজের ভাষণ শেষ করে বিধানসভার অধ্যক্ষের ঘরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে করলেন বৈঠক রাজ্যপাল৷ বিধানসভার বাইরে রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাতের আবহে অধ্যক্ষের ঘরে মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে রাজ্যপালের বৈঠক ঘিরে নতুন করে মাত্রা পেয়েছে বঙ্গ রাজনীতির৷
রাজ্যের নির্দিষ্ট করা ভাষণের বিরোধিতা করে আগেই নিজের অবস্থান জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল৷ কিছু বিষয়ে তাঁর আপত্তির কথা জানিয়ে ছিলেন৷ সেই অপত্তির অংশ পরিবর্তনের জন্য রাজ্যকে আর্জি জানানো হয় রাজভবনের তরফে৷ পরে সংবাদমাধ্যমে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ভাষণে তিনি তাঁর মতামত জানাতে পারেন৷ ভাষণ ঘিরে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের আবহে রাজ্যের বলে দেওয়া ২৫ পাতার ভাষণ এক ঘণ্টায় শেষ করলেন রাজ্যপাল৷ ভাষণে রাজ্যের নির্দিষ্ট করা বক্তব্যের বাইরে একটিও শব্দ বাদ দেননি তিনি৷ এমনকি, কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির সরকারের বিরুদ্ধে থাকা বিষয়, যেমন ‘সংবিধান আক্রান্ত’, ‘নাগরিক আইনের বিরোধীতা’, ‘এনআরসি’র বিরোধীতাও সম্মতি দেন রাজ্যপাল৷ এদিনের রাজ্যের নির্দিষ্ট করে দেওয়া ২৫-র পাতার ভাষণ ১ ঘণ্টায় শেষ করে অধ্যক্ষের ঘরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন৷ পরে বিধানসভা থেকে চলে যান রাজ্যপাল৷ প্রোটোকল অনুযায়ী ভাষণের পর বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যান রাজ্যপাল৷ কিন্তু আজ ভাষণ শেষ করে সোজা অধ্যক্ষের ঘরে চলে যান রাজ্যপাল৷ সেখানে মুখ্যমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, অধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন৷ যা একেবারে নজিরবিহীন ঘটনা বলে মনে করেছে রাজনৈতিক মহল৷
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, আগাম বিদ্রোহের ঘোষণা করার পর হঠাৎ কেন বিধানসভার অন্দরে গিয়ে নিজের অবস্থান বদলে ফেললেন রাজ্যপাল? রাজ্যের বলে দেওয়া ভাষণ নিয়ে কেন এত আপত্তি তুলেছিলেন রাজ্যপাল? রাজ্যের ভাষণেই যখন সম্মতি দিলেন, তাখন কেন আগাম এত বিতর্ক তৈরি করার চেষ্টা করলেন? প্রশ্ন তুলছে বাম-কংগ্রেস৷ গোটা ঘটনাটি লোকদেখানো বলেও মন্তব্য করতে ছাড়েনি বাম কংগ্রেস শিবির৷