কলকাতা: ‘‘বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করেছি। বাকিটা সুপারিশেই বলা রয়েছে। যতটুকু পারছি, দেওয়া হয়েছে। নেতিবাচক চিন্তা করবেন না, রাজ্যের কথা ভাবুন, ইতিবাচক চিন্তা করুন।’’ সোমবারের বাজেটে বেতন-পেনশন খাতে বরাদ্দ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমনটাই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চলতি অর্থবছরে নতুন বেতন কাঠামো অনুসারে বেতন হাতে পেলেও পে-স্লিপ-এ ডিএ-এর উল্লেখ না থাকায় একেই সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। এরপর রাজ্য বাজেটেও এনিয়ে পৃথক কোনো প্রস্তাব রাখা হয়নি। তাই সবমিলিয়ে কর্মীমহলে হতাশা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাজেটে ২০১৮-’১৯ অর্থবর্ষের বেতন খাতে বরাদ্দের হিসেব তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র জানিয়েছেন, গত অর্থবর্ষের তুলনায় চলতি অর্থবর্ষে ১৭% বেশি বরাদ্দ হয়েছে।গত অর্থবর্ষে বেতন খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৪২ হাজার ৭০ কোটি টাকা। পেনশন খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা। বাজেট প্রস্তাবে তা বেড়ে হয়েছে যথাক্রমে ৪৬ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা এবং ১৫ হাজার ৯০৬ কোটি টাকা। হিসেব অনুযায়ী ২০২০-২১ এর বাজেট প্রস্তাবে বেতন খাতে গত বছরের তুলনায় ৪ হাজার ৫৩৭ কোটি টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেই হিসেবে বেতন খাতে ৮% বেড়েছে। পাশাপাশি প্রায় ১৯০ কোটি টাকার বরাদ্দ বেড়েছে পেনশন খাতে। অর্থাৎ ১৩% বৃদ্ধির প্রস্তাব রাখা হয়েছে। যদিও অর্থমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরে জানিয়েছে, নতুন বেতন কাঠামোয় বাড়তি প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা বাড়তি খরচ। পেনশনের ক্ষেত্রেও ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের তুলনায় খরচ বেড়েছে ১৪%।
তবে অর্থ দফতরের আধিকারিকদের মতে, বর্ধিত বেতনের আওতায় আসার পর এক বছরের মধ্যে যাঁরা অবসর নেবেন, তাঁদের পেনশন অনেকটাই বেড়ে যাবে। তার সঙ্গে অতীতে অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন বৃদ্ধি মিলিয়ে বাজেটে প্রস্তাব রাখা হয়েছে। তাই ডিএ নিয়ে উদ্বেগ প্রশমিত করতে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র জানিয়েছেন পুরো বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। এমনকি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলেও আস্বস্ত করেছেন তিনি। অর্থাৎ, বেতন বৃদ্ধির পাশাপাশি ডিএ দেওয়ার বিষয়েও আশা জিইয়ে রাখলেন অর্থমন্ত্রী। এবার আগামী জুলাই মাসে অভিরূপ সরকারের নেতৃত্বাধীন ষষ্ঠ বেতন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই রিপোর্ট পেশ হয় কিনা এখন সেই অপেক্ষায় সরকারি কর্মচারীরা।