কমছে না শীতের প্রভাব, মালদার আম বাগানে উধাও বকুল, মাথায় হাত কৃষকদের

কমছে না শীতের প্রভাব, মালদার আম বাগানে উধাও বকুল, মাথায় হাত কৃষকদের

2476abb4c46f905237a67b18009ee3f8

ইংরেজবাজার: শীতের প্রভাব কমছে না উত্তরবঙ্গে। যার কারণে সময় হয়ে গেলেও এখনও মালদা জেলার অধিকাংশ আমবাগানে গাছে মুকুল আসেনি। যা নিয়ে রীতিমতো হতাশ এবং দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। এখন চাষিরা সকলেই তাকিয়ে রয়েছেন আমের মুকুল গাছে ধরবে সেই অপেক্ষায়। যদিও উদ্যানপালন দপ্তর জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে বিভিন্ন আমবাগানে বিপুল পরিমাণে মুকুল ঝরে যায়। কিন্তু এবছর তুলনামূলকভাবে  মুকুল কম ধরেছে। যদিও এনিয়ে চাষীদের অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এখনও আমগাছে মুকুল ধরার সময় রয়েছে।

বলাবাহুল্য, শীত যেন উত্তরবঙ্গ থেকে ফিরে যেতে চাইছে না। ঘুরে ফিরে আসছে ঠান্ডার প্রকোপ । যার কারণে আম চাষিরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, জেলার প্রায় ৭০ শতাংশ আমবাগানে এরকম পরিস্থিতি কখনো হয়নি বলে দাবি করেছেন চাষিরা।

আম চাষিদের একাংশ জানিয়েছেন , এবছর ফেব্রুয়ারি মাসে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে এবার আমের ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। অনেক বাগানে ইতিমধ্যে নানান ধরণের রোগ পোকা নিধনের ক্ষেত্রে ওষুধ প্রয়োগের কাজ শুরু করেছেন আম চাষিরা। কিন্তু অনেক বাগানে মুকুল গাছে ধরে নি। এনিয়ে দুশ্চিন্তার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদা জেলায় প্রায় ৩১ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়ে থাকে। ২০১৯ সালে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছিল। তবে এবছর আবহাওয়া অনুকূল না থাকলে এই উৎপাদনের মাত্রা কমতে পারে।

যদিও অন্যান্য বছরগুলিতে জানুয়ারি মাস পেরোতেই আম গাছের মুকুল চলে আসে। এমনকি অনেকক্ষেত্রে মুকুল থেকে আমের দানা তৈরি হয়ে যায়। কিন্তু এখনও অনেক আম বাগানে গাছে মুকুল নিয়ে আসেনি। ইংরেজবাজার ব্লকের গোপালপুর এলাকার আমচাষি বিনয় মন্ডল, সুজিত সরকার বলেন, আমাদের কারোর ১০ বিঘা,  কারোর ২০ বিঘা আমের বাগান রয়েছে।  কিন্তু গাছে মুকুল আসেনি। এবছর আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় মুকুলে প্রভাব পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সাধারণত উষ্ণ আবহাওয়ায় আম উৎপাদন হয়ে থাকে। যদিও এই মুহূর্তে শীতের আমেজ রয়েছে। পশ্চিমি হাওয়া নেই । তাই হয়তো আমগাছে মুকুল আসার ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। যা আম চাষিদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছর প্রাথমিক ভাবে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মেট্রিক টন । সাধারণভাবে ফেব্রুয়ারি মাসে শীতের প্রকোপ তেমন থাকে না। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে উষ্ণ আবহাওয়া না হলে আমের ফলনের ক্ষেত্রে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকতে পারে। উদ্যানপালন দপ্তরের জেলার উপ অধিকর্তা রাহুল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, মুকুল আসার ক্ষেত্রে এখনও সময় রয়েছে। পাশাপাশি রোগ পোকার আক্রমন ছাড়া এই সময়ে গাছে কোন ওষুধ প্রয়োগ না করাই উচিত। ফলন বাড়ানোর ক্ষেত্রে আমচাষীদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *