মায়ের জঠর থেকে ঝোপের মধ্যে ভাঙল ঘুম, ফুঁপিয়ে উঠল ১ দিনের শিশু

মায়ের জঠর থেকে ঝোপের মধ্যে ভাঙল ঘুম, ফুঁপিয়ে উঠল ১ দিনের শিশু

মালদা: সাতসকালে সদ্যোজাত শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনে ঘুম ভাঙল গ্রামবাসীদের। কিন্তু গ্রামের মধ্যে সদ্যজাত শিশুদের কান্নার আওয়াজ কোথা থেকে আসছে। আবাক হওয়ার পালা গ্রামবাসীদের। আর গ্রামবাসীদের তৎপরতায় ঝোঁপ থেকে উদ্ধার হয় সদ্যোজাত কন্যাশিশু। এরপর উদ্ধার হওয়া সেই শিশুকে তুলে দেওয়া হয় স্বাস্থ্য দপ্তরের তাদের হাতে।  ভাগ্যের জোরে প্রাণ ফিরে পেয়েছে ওই শিশুটি এমনটাই জানিয়েছে গ্রামবাসীরা।

বৃহস্পতিবার কাকভোরে ঘটনাটি ঘটেছে হবিবপুর থানার বুলবুলচন্ডী গ্রাম পঞ্চায়েতের সাহাপাড়া এলাকায়। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্থানীয় গ্রামবাসীরা প্রথমে গ্রামীণ হাসপাতালে স্বাস্থ্য কর্তাদের হাতে ওই কন্যাশিশুকে তুলে দেন। পরে সেখান থেকেই ওই সদ্যোজাত কন্যাশিশুকে স্থানান্তরিত করা হয় মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। এখন হাসিমুখেই নার্সেরা ওই সদ্যোজাতের লালন-পালনের দায়ভার নিয়েছে বলে মেডিক্যাল সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু কোথা থেকে ওই সদ্যোজাত শিশুটি ঝোপের মধ্যে এলো, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে হবিবপুর থানার পুলিশ।

মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুলবুলচন্ডী গ্রামীণ হাসপাতালে ওই কন্যা শিশুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। তাতে ওই শিশুটি সুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই গ্রামীণ হাসপাতালে এক মেডিক্যাল অফিসার। এরপর সেখান থেকে সদ্যোজাত শিশুকে নিয়ে আসা হয় মেডিক্যাল কলেজে। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ভোরে বুলবুলচন্ডী গ্রামীণ হাসপাতাল সংলগ্ন সাহাপাড়া মাঠের একটি ঝোপের থেকে ওই সদ্যোজাত শিশুকে উদ্ধার হয়। আপাতত তাকে মেডিক্যাল কলেজের এসএনসিইউ'তে রাখা হয়েছে। যেসব প্রসূতি মায়েদের শিশুরা অসুস্থ রয়েছে। যাদের ক্ষেত্রে সন্তানদের মাতৃদুগ্ধ এই মুহূর্তে দেওয়া বারণ রয়েছে। সেই সব মায়েদের মাতৃদুগ্ধ সংগ্রহ করেই ওই সদ্যোজাতকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে ।আর যদি এরকম মায়েদের না পাওয়া যায়। তাহলে বেবি ফুড দেওয়া হবে। এক বছর বয়স হলেই ওই কন্যাশিশুকে চাইল্ড লাইনের মাধ্যমে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে।

এদিকে কন্যা সন্তান হওয়ার কারণে কি ওই সদ্যোজাতকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তা নিয়ে অবশ্য হবিবপুর থানার পুলিশ এবং প্রশাসন তদন্ত শুরু করেছে। রাজ্য সরকার মেয়েদের সমাজে উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের প্রকল্প এবং সুবিধা প্রদান করেছে। তারপরেও কেন এরকম ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে বুলবুলচন্ডী এলাকায় গ্রামবাসীরা প্রশ্ন তুলেছেন। সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, কন্যাশিশুটিকে দেখে কার না মায়া হবে । যারা এরকম কাজ করেছে তাদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ডাঃ পার্থপ্রতিম মুখার্জি জানিয়েছেন, বুলবুলচন্ডী গ্রামীণ হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা থেকে একটি সদ্যোজাত কন্যা শিশু উদ্ধার হয়েছে। আপাতত ওই শিশুটি মেডিক্যাল কলেজের নার্সদের অধীনে রয়েছে। উদ্ধার হওয়া শিশুটির সুস্থ রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *