জলঙ্গি গুলিকাণ্ডে আক্রমণাত্মক মমতা, দিলেন রাজনৈতিক ‘খুনে’র পরিসংখ্যান!

জলঙ্গি গুলিকাণ্ডে আক্রমণাত্মক মমতা, দিলেন রাজনৈতিক ‘খুনে’র পরিসংখ্যান!

কলকাতা: বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বাংলায় রাজনৈতিক সংঘর্ষে মৃত্যুর পরিসংখ্যান তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ একইসঙ্গে জলঙ্গিতে নাগরিক আইন বিরোধী মিছিলে গুলি ও দু’জনের মৃত্যুর ঘটনায় বিরোধীদের উপর দায় চাপিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

আজ বিধানসভায় বাজেট আলোচনায় বিরোধীদের চাঁচাছোলা ভাষায় আমন্ত্রণ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ জলঙ্গিতে নাগরিক আইন বিরোধী মিছিলে গুলি-কাণ্ড প্রসঙ্গে আক্রমণাত্মক মুখ্যমন্ত্রীর জবাব, কেন সরস্বতী পুজোর দিন বনধ ঢাকা হয়েছিল৷ জলঙ্গিতে সাম্প্রদায়িক কার্ড খেলা হচ্ছে৷ যা হয়েছে তার জন্য বিরোধীরা দায়ী৷ এদিন বাংলার রাজনৈতিক সংঘর্ষে মৃত্যুর পরিসংখ্যান তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ২০০১ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে ৬৬৩টি৷ আর গত ৮ বছরে রাজনৈতিক হত্যা হয়েছে ১৫৪টি নিহতদের মধ্যে তৃণমূলের কর্মীরা আছেন৷ আমি চাই না এটা আরও বৃদ্ধি হোক৷

বিরোধীদের অভিযোগ, নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে এই রাজ্যে বিরোধীদের মিটিং মিছিল করতে দেওয়া হচ্ছে না৷ পুলিশ লাঠি চালাচ্ছে৷ সভা-সমিতি করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না৷ এমনকি ঐশী ঘোষকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সভা ও দুর্গাপুরে মিছিল পর্যন্ত করতে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি৷ বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, রানিরাসমণি রোড গত কয়েকদিন ধরে তৃণমূল দখল করে ধর্না চালিয়ে যাচ্ছে৷ একটাই মাত্র সভা-সমাবেশ করার জায়গা ছিল কলকাতায়৷ রানিরাসমণিতেও এখন সভা করা যাচ্ছে না৷

কেন বিরোধীরা সভা করতে পারছেন না? তার জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই রাজ্যে সব থেকে বেশি বিরোধীরা সভা করার অনুমতি পাচ্ছেন৷ তাদেরকে অনুমতি দেওয়া হয়৷ কিন্তু তারা যদি পরীক্ষার সময় অনুমতি চায়, তা তাদের দেওয়া হবে না৷ সভা করার নামে, মিছিল-মিটিং করার নামে যদি কেউ সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করে, তাদেরকে অবশ্যই গ্রেপ্তার করা হবে৷ তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করার পরেও তাদের গ্রেপ্তার করা হবে না? এই নিয়ে রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷

বিধানসভা থেকে জানিয়ে দেন, বিরোধীদের সভা করতে অনুমতি দেওয়া হয় এই রাজ্যে সেই গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে৷ একই সঙ্গে এ দিন বিরোধীদের বেশ কয়েকটি প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আক্রমনাত্মক হয়ে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী৷  আজ বিধানসভায় সুজন চক্রবর্তী প্রশ্ন তুলেছিলেন, বলা হয়, বাম-কংগ্রেসের ভোট বিজেপিতে গিয়েছে৷ কিন্তু তাহলে ভবানীপুরে বিজেপির ভোট কীভাবে বাড়ল? এর জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যাদবপুর নিয়ে আপনারা ভাবুন৷ ভবানীপুর নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না৷

মুখ্যমন্ত্রী আজ বিধানসভায় বিরোধীদের একাধিক প্রশ্নের জবাব দেন৷ বলেন কংগ্রেস যত সিপিএমের পাশে যাচ্ছে, তত তারা সাইনবোর্ডে পরিণত হচ্ছে৷ গোটা দেশের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে৷ এই জন্যই তিনি তৃণমূল তৈরি করেছিলেন৷ এই কারনেই তিনি কংগ্রেস ছেড়েছিলেন৷ একই সঙ্গে তিনি কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে বলেন, যেখানে যেখানে আঞ্চলিক দলগুলির শক্তিশালী হয়েছে, সেখানে কংগ্রেসকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না৷ যেখানে আঞ্চলিক দল নেই সেখানে কংগ্রেস বিরোধী ভোট পাচ্ছে৷ বিধানসভায় কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিকভাবে এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 5 =