প্রতি বছর ভাঙছে গঙ্গার বাঁধন, সমাধান চেয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে মালদহ

প্রতি বছর ভাঙছে গঙ্গার বাঁধন, সমাধান চেয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে মালদহ

ইংরেজবাজার:  গঙ্গার ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান চেয়ে সরব হয়েছেন মানিকচক ব্লকের মথুরাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার শংকরটোলা এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, প্রতিবছর বর্ষার মরশুমে শংকরটোলা গঙ্গার ঘাটে ভাঙ্গন হচ্ছে। আর সেই সময় প্রশাসনের তরফ থেকে অস্থায়ীভাবে বালির বস্তা এবং বাঁশ দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। যাতে করে সাময়িক সময়ের জন্য ভাঙন ঠেকানো গেলেও পরবর্তীতে সেই অস্থায়ী কাজ টিকে থাকছে না। এতে সরকারের বিপুল অর্থ অপচয় হচ্ছে। কিন্তু এবারে এরকম কাজ না করে, স্থায়ীভাবে বাঁধ মেরামতি করা হয় সেই দাবী প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধিদের জানানো হয়েছে।

মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌর চন্দ্র মন্ডল জানিয়েছেন, আমি মানিকচক এলাকার বাসিন্দা। মানিকচকের এলাকায় গঙ্গার ভাঙ্গন মেরামতি নিয়ে যথেষ্ট উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার এবং সেচ দপ্তর। কিন্তু বিগত দিনে ওই এলাকায় ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ কাজ করেছিল। শংকরটোলা গ্রামের বাসিন্দারা যে দাবি করেছে তা অবশ্যই প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের এই দাবির বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হবে।

উল্লেখ্য, মালদা জেলার গঙ্গাভাঙ্গন একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে । মানিকচক, কালিয়াচক ২,৩  ব্লকে গঙ্গার ভাঙ্গনের সমস্যা রয়েছে। যার ফলে প্রতিবছর বর্ষার মরশুমে এই ব্লকের হাজারো মানুষের দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয়। সাময়িকভাবে ভাঙন ঠেকানোর কাজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হলেও । পরবর্তীতে আবার একই সমস্যা থেকে যায়।  যার কারণেই এবারে মানিকচকের শংকরটোলা গ্রামের বাসিন্দারা তাদের এলাকায় বাঁধ মেরামতির স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।

শংকরটোলা গ্রামের বাসিন্দা আজাহার শেখ, রফিকুল আলম, রুবেন মন্ডলদের বক্তব্য, বর্ষার মরশুমে শুধু নয়, অসময়ে এই এলাকার গঙ্গা নদীতে ভাঙন হচ্ছে। বহু মানুষ ভাঙ্গনে ভিটেমাটি হারিয়েছেন। ফারাক্কা ব্যারেজ এবং সেচ দপ্তরের টানাপোড়েনে এলাকার ভাঙ্গন প্রতিরোধের কাজ স্থায়ীভাবে হচ্ছে না। বর্ষার সময় যখন ব্যাপক ভাঙন হচ্ছে, তখন স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঠিকাদারেরা দায়সারাভাবে বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর কাজ চালাচ্ছেন। কিন্তু এতে সরকারের টাকা নষ্ট হচ্ছে। কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। এবছর আবারো ভাঙন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এবার স্থায়ী সমাধান না হলে দায়সারা ভাবে কাজ করতে দেওয়া হবে না।

মানিকচকের বিধায়ক মোত্তাকিন আলম বলেন, বাসিন্দাদের দাবি ন্যায্য। গঙ্গা ভাঙনের জেরে গ্রামবাসীরা আতঙ্কের মধ্যে থাকেন। ওই এলাকায় যাতে স্থায়ীভাবে বাঁধ মেরামতি করা হয়। সে ব্যাপারে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানানো হবে। জেলা সেচ দপ্তরের আধিকারিক প্রণব কুমার সামন্ত জানিয়েছেন, শুধু মানিকচক নয়, জেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় নদীর ভাঙ্গন এবং বাঁধের সমস্যা আছে। বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছে । রাজ্য সরকারের সবুজ সংকেত পেলেই কাজ শুরু করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *