জলপাইগুড়ি: পোলিও ওষুধ খেয়ে চোখ হারাল দেড় বছরের একটি শিশু। এমনই অভিযোগ তুলেছেন শিশুটির পরিবার। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে ডুয়ার্সের ধূপগুড়ি ব্লকের দুরামারি কেরানিপাড়া এলাকায়। দেড় বছর বয়সের ওই শিশুটির নাম দীপান্বিতা রায়। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় শিশুটিকে। দেড় বছরের মধ্যে টিকা ও ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা ছিল। সেখানকার সাস্থ্যকর্মীরা পর পর তিনটি ইঞ্জেকশন দেন ও ভিটামিন তেল শিশু টিকে খাওয়ান।
জে ই-২ ইঞ্জেকশন , ডিপিটি বুস্টার ১ ডোজ, ওপিভি বুস্টার, এর দশ মিনিট পর ফের তারপর ভিটামিন ‘এ’ দেওয়া হয় । তার দুই হাতে দুটো ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। এর দশ মিনিট পর ফের পায়ে একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। তারপর ভিটামিন ‘এ’ এবং পোলিও ভ্যাকসিন খাওয়ার কিছুক্ষণ পর থেকেই শিশুটির ডান দিকের চোখটি লাল হতে শুরু করে। পরে একইভাবে অন্য চোখটিতেও একই সমস্যা দেখা যায়।
রাতে আরও বেশি লাল হতে থাকে চোখ দুটি। পরদিন সকালেই বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় শিশুটিকে। সেখান থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেও দুদিন রেখে চিকিৎসা করা হলেও দেখা যায় শিশুটি নিজের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে। পরবর্তীতে ভাল চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে নেপালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জানিয়ে দেওয়া হয় অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। শিশুটির দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার আর কোনও সম্ভাবনা নেই।
সন্তানের চোখ হারানোর ঘটনার পর একেবারেই ভেঙে পড়েছেন শিশুটির মা পুষ্পিতা রায় বসুনিয়া ও বাবা দিব্যেন্দু রায়। তাঁরা জানান, এই মুহূর্তে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন দুদিনের মধ্যে হায়দরাবাদ বা নেপালের কাঠমান্ডুতে নিয়ে গিয়ে শিশুটির চিকিৎসা করাতে। কীভাবে তারা এখন এত টাকা খরচ করবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না। স্থানীয় বাসিন্দা কানু রায় বলেন, শিশুটির চোখ নিয়ে আমরা খুবই দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি। আমরা চাই শিশুটি যাতে খুব তারাতারি নিজের চোখ ফিরে পায়। বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরে যাওয়া হলে সেখানকার আধিকারিকরা লিখিতভাবে অভিযোগ জানানোর কথা বলেছেন।