বর্ধমান: ট্রেনে যাত্রার সময়ে মোবাইল ফোনে কথা বলায় ব্যস্ত ছিলেন মা ও ঠাকুমা। আর পরিবারের অন্যরা ব্যস্ত ছিলেন মোবাইলে গেমে৷ তাঁদের সঙ্গেই ছিল সবেমাত্র হাঁটতে শেখা দেড়বছর বয়সী শিশুকন্যা কৃশিকা চৌধুরী। সেই ফাঁকেই গুটি গুটি পায়ে চলন্ত ট্রেনের কামরার গেটের কাছে এগিয়ে যাওয়া শিশুকন্যা ট্রেনের ঝাঁকুনিতে বেসামাল হয়ে পড়ে যায় ট্রেন থেকে। শুক্রবার রাত পৌনে ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বর্ধমান হাওড়া কর্ড শাখার আপ লোকাল ট্রেনে। পাল্লারোড এলাকার বাসিন্দারের মাধ্যমে খবর পেয়ে আরপিএফ রাতে আপ লাইনের সিগন্যাল পোটের কাছে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকা শিশুকন্যাকে উদ্ধার করে। কলকাতার একটি বোসরকারী হাসপাতালে এখন শিশুকন্যাটি চিকিৎসাধীন রয়েছে। কিভাবে এই ঘটনা ঘটল তার তদন্ত শুরু করেছে আরপিএফ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, শিশুকন্যার পরিবারের বসবাস হাওড়ার লিলুয়ায়। পরিবার কর্তা বিজয় চৌধুরী, শিশুকন্যা কৃশিকা ও তাঁর মা সীমা চৌধুরী, ঠাকুমা সুশীলা চৌধুরী সহ পরিবারের ছয়জন শুক্রবার বর্ধমান গামী লোকাল ট্রেনে চড়েন। বর্ধমান স্টেশন থেকে প্রতাপ এক্সপ্রেস ধরে তাদের রাজস্থান বেড়াতে যাবার কথা ছিল। আপ বর্ধমান লোকাল ট্রেনে চড়ে যাবার সময়ে পরিবারের সকলে মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পুলিশ মনে করছে, ওই সময়েই পরিবারের সবার নজর এড়িয়ে সদ্য হাঁটতে শেখা শিশুকন্যা চলন্ত ট্রেনের কামরার গেটের কাছে চলে যাওয়াতেই বিপত্তি ঘটে যায়। ট্রেন পাল্লারোড স্টেশন ছাড়ার সময়ে ঝাঁকুনিতে টাল সামলাতে না পারা শিশুকন্যা কৃশিকা ট্রেনের কামরা থেকে নিচে পড়ে যায়।
পাল্লারোড এলাকার বাসিন্দা সন্দীপন সরকার, অসিত চৌধুরী প্রমুখরা বলেন, জখম অবস্থায় প্রায় আধ ঘন্টা ধরে আপ লাইনের একটি সিগন্যাল পোস্টের কাছে অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিল শিশুকন্যাটি। সেই খবর পেয়ে টর্চ জ্বালিয়ে আপ লাইনের ধার ধরে খোঁজ চালাতে চালাতে আরপিএফ ঘটনাস্থলে চলে আসে। শিশুকন্যাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে পাল্লারোড স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই সময়ে মেয়ের খোঁজে শক্তিগড় স্টেশন থেকে ট্রেনে চড়ে পাল্লারোড স্টেশনে চলে আসেন শিশুকন্যার বাবা। দ্রুত শিশু কন্যাকে নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে কলকাতায় স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে কলকাতার মোমিনপুরের একটি বেসরকারী হাসপাতালে শিশুটি চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সন্দীপন সরকার বলেন, শিশুকন্যার বাবা তাদের জানিয়েছে, লোকাল ট্রেনে চড়ে যাবার সময়ে তাদের পরিবারের কেউ মোবাইলে গেম খেলতে ব্যস্ত ছিল। আবার কেউ ব্যস্ত ছিল ফোনে আত্মীদের সঙ্গে কথা বলতে। ওই সময়ে কেউ বুঝতেই পারেনি তার ছোট্ট মেয়ে কখন ট্রেনের দরজার কাছে চলে গিয়েছে। রেল পুলিশের সুপার (হাওড়া ) কে কারনান বলেন, “শিশুটি এখন ভাল আছে বলে জানা গেছে। কিভাবে শিশুটি পড়েগেল তা জানার জন্য শিশুটির পরিজনদের সঙ্গে কথা বলা হবে।