সাবধান! শিক্ষক নিয়োগের নামে বাজারে ঘুরছে ভুয়ো ‘সরকারি’ ওয়েবসাইট

আসল ওয়েবসাইট ‘wbbpe.org’ আর নকল ওয়েবসাইট 'wbbper.org'। পার্থক্য শুধু একটা ' r '। নকল ওয়েবসাইটে প্রাথমিক শিক্ষক পদে পরীক্ষার ফলাফলের লিঙ্কে গিয়ে চাকরিপ্রার্থীর নাম ও রোল নম্বর সাবমিট করলে অনেকের নাম এমপ্যানেলড দেখাচ্ছে।

কলকাতা: দেশের বেকারত্ব যে হারে বাড়ছে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অসামাজিক কার্যকলাপ।শিক্ষিত যুসমাজ রোজগারের জন্য বেছে নিচ্ছে নানান অবৈধ এবং বেআইনি কাজ। আবার বেকারত্বের সুযোগ নিয়ে শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের কাজে লাগিয়ে প্রশাসনের কড়া প্রহরা এড়িয়েই আগাছার বেড়ে উঠছে একের পর এক প্রতারণা চক্র। এক্ষেত্রে চাকরির নামে প্রতারণা চক্রের অবস্থান বহু পুরোনো এবং প্রচলিত। বর্তমানে নেট দুনিয়ায় দৌলতে এই ধরণের প্রতারণা চক্রের কাজ অনেক বেশি সহজ এবং সাবলীল হয়ে উঠেছে। শুধু তাই নয় রীতিমতো সরকারি নাম ও আদলে অবিকল সরকারি ওয়েবসাইট তৈরি করা হচ্ছে। যার ফাঁদে খুব সহজেই পা দেবেন শিক্ষিত বেকারেরা। সম্প্রতি রাজ্যে এমনই এক জাল চক্রের হদিশ মিলেছে। তাও আবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের টোপ দিয়ে। যার ভরসায় পুরোনো-নতুন মিলিয়ে অন্তত লক্ষাধিক প্রার্থী ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন দেখছেন। অথচ পশ্চিমবঙ্গে বিগত পাঁচ বছর ধরে এই ক্ষেত্রে নিয়োগ বা পরীক্ষা গ্রহণ কার্যত বন্ধ রয়েছে।

হুবহু ‘ওয়েস্টবেঙ্গল বোর্ড অব প্রাইমারি এডুকেশন’-এর ওয়েবসাইটের আদলে তৈরি এই ওয়েবসাইটের পেজে আসল ওয়েবসাইটের মতোই আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের ছবি, পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের লোগো সহ সবকিছুই একই রাখা হয়েছে। এখানে শিক্ষক পদক্ষেপের পরীক্ষার ফলাফলের লিঙ্ক দেওয়া আছে, একবার ক্লিক করা চাকরিপ্রার্থীর নাম এবং রোল নম্বর জমা দেওয়া হয়েছে বিভক্তকরণের জন্য। অনিশ্চিত নাম, রোল নম্বর অবস্থান কার কারো না যদিও গুগলে সার্চ করলে আসল ওয়েবসাইট দেখা যাবে। মূলত ২০১৫ সালের টেট পরীক্ষায় বসা পরীক্ষার্থীদেরই শিকার বানাচ্ছিল এই প্রতারণা চক্র।

তবে প্যানেলে তাঁরাই নিজের নাম দেখতে পাচ্ছিলেন যারা সরকারি নিয়ম জানা সত্ত্বেও চাকরি পাওয়ার আশায় মোটা অংকের টাকা তুলে দিয়েছেন এই দালাল চক্রের হাতে। জেলা অনুযায়ী প্রার্থী পিছু ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে এই ভুয়ো চক্র। কেউ পুরো টাকা একেবারেই দিয়েছেন, কেউ  অর্ধেক। কিন্তু চাকরির সুযোগ আসেনি। বিধাননগর পুলিস কমিশনারেটে এমন বহু অভিযোগ জমা পড়েছে। এই ধরনের প্রতারণার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন আধিকারিকরা। তবে অনেক প্রভাবশালী এই চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠছে। তদন্ত হলেই যোগসাজশের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসবে বলেই মত প্রকাশ করেছেন প্রার্থীরা। যদিও এখন ওই ভুয়ো ওয়েবসাইটটি আর খুবলছে না৷

সম্প্রতি সরকারি সূত্রে জানা গেছে যে রাজ্যের পুরভোট মিটে গেলেই  প্রাথমিক টেট পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি জারি হবে। এর আগে ২০১৫ সালে কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের টেট পরীক্ষায় বসেছিলেন। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর কয়েক দফায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগও করেছে রাজ্য। তবে নানান জটিলতায় প্যানেলভুক্ত একটা বড় অংশের চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ থমকে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five + 9 =