কীভাবে রুখবেন করোনা? উপায় বলে দিলেন মমতা, চালু হেল্পলাইন

রাজ্যের সরকারি, বেসরকারি সব হাসপাতালেই কুইক রেসপন্স টিম তৈরি। অসুস্থতা সংক্রান্ত যেকোনও প্রশ্ন থাকলে ২৪ঘন্টার জন্য থাকছে কল সেন্টার। এই কল সেন্টারের নম্বর হলো ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২। এছাড়াও রয়েছে ২৪ঘন্টা হেল্পলাইন নম্বর ০৩৩ ২৩৪১ ২৬০০।

কলকাতা: দেশে করোনা সংক্রমণ চিহ্নিত হওয়ার পর অন্যান্য রাজ্যের মত পশ্চিমবঙ্গেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। শুক্রবার নবান্নে এনিয়ে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখনও পর্যন্ত এরাজ্যে করোনা সংক্রমণ চিহ্নিত হয়নি বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।

করোনা নিয়ে রাজ্যের প্রস্তুতি সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন, এই রোগ মোকাবিলায় কলকাতার সব হাসপাতালেই পরিকাঠামো রয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি জেলায় অ্যাডভাইসররি পাঠানো হয়েছে। রাজ্যের সরকারি, বেসরকারি সব হাসপাতালেই কুইক রেসপন্স টিম তৈরি। অসুস্থতা সংক্রান্ত যেকোনও প্রশ্ন থাকলে ২৪ঘন্টার জন্য থাকছে কল সেন্টার। এই কল সেন্টারের নম্বর হল, ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২। এছাড়াও রয়েছে ২৪ঘন্টা হেল্পলাইন নম্বর ০৩৩ ২৩৪১ ২৬০০।

এদিন রাজবাসীকে করোনা নিয়ে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নতুন এই ভাইরাস প্রতিরোধে পর্যাপ্ত ওষুধ ও মাস্কের জন্য কেন্দ্রকে জানানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এই দুর্দিনে অযথা ওষুধ বা মাস্কের দাম বাড়িয়ে মানুষের হয়রানি বাড়ানো যাবেনা তাই এবিষয়ে রাজ্যের ওষুধ ব্যাবসায়ীদের কার্যত হুঁশিয়ারি  দিয়েছেন। মাস্কের কালোবাজারি ঠেকাতে নজরদারি করা হবে। এরজন্য পুলিশ ও ইবিকে নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুসারে এই রোগ প্রতিরোধে করণীয় বিষয়গুলিও এদিন ব্যাখ্যা করেন মমতি। যেমন- 

অসুস্থতা গোপন করলে চলবে না।  জ্বর, সর্দিকাশি হলে অন্তত ১৪ দিন বাড়িতেই বিশ্রামে থাকতে হবে। সর্দিকাশি,জ্বর ও শ্বাসকষ্ট থাকলে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার সময় মুখে অবশ্যই মাস্ক  পড়তে হবে। অফিসে কর্মরত বা স্কুল পড়ুয়াদের বারবার হাত ধোয়ার কথা মাথায় রাখতে হবে। হাত ধুতে হবে স্যানিটাজার বা হ্যান্ড ওয়াশ দিয়ে। বাড়ির কোনো সদস্যের অসুস্থতা থাকলে এমনকি বাড়ির পরিচারিকা থেকে রাঁধুনি বা ড্রাইভাররা অসুস্থ হলেও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বাড়িতেই তাদের পৃথকভাবে রেখে সঠিক ওষুধ বা ডাক্তারি পরিষেবা দিতে হবে। হাঁচি কাশিতে ব্যবহৃত ন্যাপকিন ব্যবহারের পরেই ফেলে দিতে হবে। 

করোনা মোকাবিলায় সব জায়গায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজ্যের টিভি চ্যানেলগুলিকে করোনা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সচেতনতা মূলক প্রচার বা বিজ্ঞাপন দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

অন্যদিকে বাইরে থেকে এরাজ্যে আগত বিদেশি পর্যটকের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্প্রতি রাজ্যে আগত চীন, হংকং, জাপান, সাউথ কোরিয়া সহ বেশকয়েকটি দেশ থেকে আগত ১৫৩৯জন বিদেশি পর্যটকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে। একজনের  শরীরেও করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়নি বলেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে অন্তর্দশীয় উড়ানে চেকিংয়ের ব্যবস্থা থাকা উচিত বলেই উল্লেখ করেছেন তিনি। রাজ্যে রেলওয়ে স্টেশনগুলিতেও করোনা নিয়ে সতর্কতা ও প্রচারের ব্যবস্থা করার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিক রাজ্যের সীমান্তগুলিতেও নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাজ্যের তরফ থেকে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 1 =