কলকাতা: সারা রাজ্যে মাছ ডিম সহ বিভিন্ন কৃষিজ পণ্য অবাধে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় চলাচলের সুযোগ করে দিতে রাজ্য সরকার চেকপোস্ট তুলে দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার নবান্নে জানিয়েছেন পণ্য চলাচলের ওপর নজরদারি করার জন্য সারা রাজ্যে কৃষি বিপনন দপ্তরের অধীনে ১০৯ টি চেকপোস্ট ছিল। ২২ টি নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটি এগুলি পরিচালনা করত।
কিন্তু চেকপোস্টে দীর্ঘ সময় আটকে থাকার কারণে মাছ ডিম সহ বিভিন্ন পচনশীল কৃষি পণ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল বলে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন একাধিকবার সরকারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই আগামী ১ এপ্রিল থেকে এই চেকপোস্ট গুলি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন রাজ্য সরকারের নীতি হলো এক রাজ্য এক বাজার। তাই রাজ্য সরকারের ২০০ কোটি টাকা লোকসান হলেও এখন থেকে রাজ্যের সব জেলায় অবাধে কৃষিপণ্য চলাচলের ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। ওই চেকপোস্ট গুলিতে কর্মরত সাড়ে ছশ কর্মীকে নিকটবর্তী কৃষক মান্ডি ও কৃষি বাজারে পুনর্বাসন দেয়া হবে বলেও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মূলত কয়েকটি বিষয়ের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথমত পণ্য দ্রুত বাজারে পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের থেকে অভিযোগ এসেছে চেকিংয়ের ফলে পণ্য নষ্ট হচ্ছে বা পচে যাচ্ছে। তাদের কথা মাথায় রেখেই এই সরকার চেকিং তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজ্যে নানা প্রান্তে ১০২টি চেকিং পয়েন্ট ছিল। চেকিং পয়েন্টে যারা চাকরি করতেন, তাঁরা কেউ চাকরি হারাচ্ছে না বলেও আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছন, সংখ্যাটা ৬৫০। তাদের নিকটবর্তী কিষাণ বাজারে নিয়োগ করা হবে। চেকিংয়ের পরিবর্তে থাকবে সেলফ ডিক্লারেশন। অর্থাৎ, চেকিং পয়েন্ট দিয়ে যাঁরা পণ্য নিয়ে ঢুকবেন তারা তাঁরা নিজেই তাঁদের পরিচয় দেবেন।
যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে নানা প্রান্ত থেকে কিছু প্রশ্ন উঠছে। বেআইনি অস্ত্র পাচার, চোরাপথে আসা মাদক পাচার কীভাবে রোখা যাবে। নবান্নসূত্রে পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, এই ব্যাপারে সরকার আগে থেকেই ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগে জেলা সফরে গিয়ে পুলিশকে নাকা তল্লাশির কথা বলেছিলেন। সেই নির্দেশের ওপর নবান্নের ভরসা রয়েছে।