কলকাতা: রাজ্যের বিরোধী নেতৃত্বের কাছে বাড়াবাড়ি মনে হলেও বাংলার ‘নো করোনা’ স্ট্যাটাস নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর তৎপড়তাকেই কুর্নিশ জানিয়েছে 'হু'। পশ্চিমবঙ্গের হু-এর কো-অর্ডিনেটর ডাঃ প্রীতম রায় জানিয়েছেন, রাজ্য থেকে শুরু করে জেলাস্তর পর্যন্ত আইসোলেশন, কোয়ারেন্টাইন, রোগ পরীক্ষা সহ একাধিক বিষয়ে যেভাবে হুঁ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের গাইডলাইন মেনে চলছে বাংলা, তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। তবে করোনা নিয়েও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করতে পিছপা হচ্ছেন না বিরোধীরা। কিন্তু যেহেতু এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে কোনও করোনা আক্রান্তের হদিশ মেলেনি তাই মমতার পদক্ষেপ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি খোদ দেশের শাসক দলের নেতা এরাজ্যের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিশেষত যখন করোনা মোকাবিলায় বাংলার পদক্ষেপ নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ করেছে খোদ কেন্দ্রীয় সরকার। এবার এখনও পর্যন্ত বাংলাকে করোনা মুক্ত রাখতে সরকারি পদক্ষেপগুলি নিয়ে সন্তুষ্ট বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টজনেরাও। বিশিষ্ট কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ কুণাল সরকারের মতেও “করোনা মোকাবিলায় অত্যন্ত সদর্থক ভূমিকা নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। এই পথে ভবিষ্যতেও চলতে হবে”।
বিশ্বজুড়ে হু-এর কড়া সতর্কতামূলক বার্তা সত্ত্বেও পর পর ১৫৭টি দেশে যেভাবে সংক্রমণ ছড়িয়েছে সেখানে অনেক আগে থেকেই প্রতিবেশী রাজ্যগুলির সঙ্গে সীমান্তবর্তী সমস্ত এলাকায় ব্যাপক নজরদারি সহ একাধিক সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। স্থল, জল, বিমানবন্দরের মাধ্যমে লাগাতার নজরদারি, সীমান্তবর্তী ৭৮টি এলাকায় চেকিং সহ বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ রীতিমতো কার্যকরী পদক্ষেপ বলেই জানিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী। তিনি আরও বলেন, যে কোনও সময় যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য লাখেরও বেশি স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসক প্রস্তুত আছেন।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার পর্যন্ত ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩১। এরমধ্যে ১২ জন বিদেশি। বিশ্বে এপর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭,১৫৮। কর্নাটক, দিল্লির পর এবার মহারাষ্ট্রেও এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়েছে। মুম্বাইয়ের কস্তুরবা হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওই প্রৌঢ়ের।
এদিকে করোনা আতঙ্কে দেশজুড়ে সমস্ত দর্শনীয় স্থানে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ধর্মীয় স্থানের পাশাপাশি দেশের অন্তত ৩,৬০০টি স্মৃতি সৌধে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাজমহল, লালকেল্লা, দেবগিরির দুর্গর পর এবার বৃহস্পতিবার থেকে অজন্তা-ইলোরা সহ দেশের বেশ কয়েকটি গুহায় পর্যটকদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল তালিকায় রয়েছে । করোনা সংক্রমণ এড়াতে এরাজ্যেও অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে টাইগার হিল, সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যান, মহানন্দা ও জলদাপাড়া অভয়ারণ্য। দেশের ধর্মীয় স্থানেও করোনার কোপ রাজ্যের বেলুর মঠে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে আগেই। দক্ষিনেশ্বর মন্দিরেও দর্শেনের সময়সীমা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে সোমবার থেকে বন্ধ করা হয়েছে মহারাষ্ট্রের সিদ্ধি বিনায়ক মন্দির,উজ্জয়িনীর মহাকাল মন্দির, ঔরঙ্গাবাদের বিবি-কা-মকবারা সহ বেশকিছু প্রসিদ্ধ ধর্মীয় স্থানে প্রবেশ। ও দেবগিরির দুর্গেও পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।