কলকাতা: করোনার প্রকোপ রুখতে একের পর এক পদক্ষেপ করছে রাজ্য। বৈজ্ঞানিক উপায়ে চলছে রোগ সংক্রমণ মোকাবিলার কাজ। এরই মধ্যে 'মহামারী' রুখতে রাজ্যে বিক্ষিপ্তভাবে গোমূত্র সেবনের আয়োজন করছে বিজেপি। রমরমিয়ে গোমূত্র বিক্রির খবরও শোনা গেছে। এই 'অবৈজ্ঞানিক' প্রচারের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ। সেই মর্মে বর্ধমান সদর থানায় আবেদনও জানানো হয়েছে সংগঠনের তরফে।
কোথাও শিঙে ফুল ঝুলিয়ে মহা ধুমধামে হচ্ছে পুজো, কোথাও আবার খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে গোমূত্র। করোনা রুখতে এমনই 'দাওয়াই'-এর সন্ধান মিলছে এই রাজ্যে। কখনও ডানকুনি, কখনও খোদ কলকাতায়। একুশ শতকে দাঁড়িয়েও এহেন 'কুসংস্কার' মেনে নিতে পারেনি পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ঐক্য মঞ্চ। তাদের তরফে মঙ্গলবার বর্ধমান সদর থানায় এই 'অবৈজ্ঞানিক প্রচারের' বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার আবেদন জানানো হয়েছে। তাদের কথায়, 'সর্বত্র সচেতনতা ও সর্তকতা করা হচ্ছে রাষ্ট্র ও প্রশাসন দ্বারা৷ সারা বিশ্বের বিজ্ঞানীরা হন্যে হয়ে খুঁজছেন এর প্রতিষেধক৷ বিশ্বের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও জনজীবন বিপর্যস্ত। এই সুযোগে বিশেষ মতাদর্শে বিশ্বাসী মানুষ পরিকল্পিতভাবে করোনা রুখতে গোমূত্র সেবন করাচ্ছেন সর্বত্র। যা সম্পূর্ণরূপে বিজ্ঞানের পরিপন্থী৷ এর মাধ্যমে কুসংস্কারকে সমাজের সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়ে জনমানসে কুপ্রভাব বিস্তার করছেন এবং জনজীবনকে বিপদগামী করছেন।' সংগঠনের সহ সম্পাদক শ্রীমন্ত ঘোষ বলেন, 'সমাজসচেতন, বিজ্ঞানমনস্ক একজন শিক্ষক হিসেবে এই কুসংস্কার এবং অন্ধ ধর্মবিশ্বাস কখনওই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা সাংগঠনিকভাবে এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং রাজ্য প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করছি।'
প্রসঙ্গত, সোমবার সকাল থেকেই জোড়াসাঁকোয় চলছিল গরুপুজো। পাশেই পোস্টারে গোমাতার উদ্দেশে লেখা ছিল, গোমূত্র খেয়ে আমরা যেন করোনার মোকাবিলা করতে পারি। অন্যদিকে ডানকুনিতে প্রকাশ্যে গোমূত্র বিক্রি করারও অভিযোগ উঠেছে। যদিও এই প্রসঙ্গে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বরং ওই 'অবৈজ্ঞানিক প্রচার'কারীদের হয়েই সওয়াল করেছেন।