কলকাতা: আতঙ্ক ছিলই, এবার এরাজ্যেও মিললো প্রথম করোনা আক্রান্তের খোঁজ। কোভিড-১৯ পজিটিভ ধরা পড়ল ১৮ বছর বয়সি ব্রিটেন ফেরত এক তরুণের শরীরে। সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর,১৫ মার্চ রবিবার ব্রিটেন থেকে কলকাতায় ফেরেন বাইপাস লাগোয়া পঞ্চসায়র থানা এলাকার এক অভিজাত আবাসনের বাসিন্দা ওই যুবক। লন্ডনের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। তাঁর বাবা উচ্চপদস্থ আমলা। প্রাথমিকভাবে কোনো উপসর্গ না থাকায় রবিবার লন্ডন থেকে কলকাতায় ফিরে সরাসরি নিজের বাড়িতে চলে যান ওই তরুণ।
সোমবার পারিবারিক সূত্রে নবান্নে এক শীর্ষ আধিকারিকের সঙ্গে দেখাও করতে যান। যেহেতু ব্রিটেন থেকে ফিরেছেন তাই সেখানেই এক আধিকারিক তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। তবে সেদিন পরিবারের তরফে ওই তরুণকে এমআর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেদিন থেকেই তাঁর শরীরে সামান্য উপসর্গ দেখা দেয়। ফলে চিকিৎসকরাও তাঁকে আইডি হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। অবশেষে মঙ্গলবার সকালে ওই তরুণকে বেলেঘাটা আইডিতে নিয়ে আসা হয়। সেদিন ওই তরুণ সহ ৭০ জনের নমুনা কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য এনআইবি পুনে এবং নাইসেডে পাঠানো হয়েছিল। রাতে রিপোর্টে দেখা যায় তিনি করোনা পজিটিভ।
বাকিদের রিপোর্ট যদিও নেগেটিভ ছিল। রিপোর্ট হাতে আসার পরেই নড়েচড়ে বসে স্বাস্থ্য দপ্তর। সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। রাতেই নদীয়ার জেলাশাসককে জরুরি ভিত্তিতে নির্দেশ দিয়ে ওই তরুণের বাবাকে কলকাতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করে সরকার। তাঁর মা যেহেতু সঙ্গেই ছিলেন তাই তাঁকেও কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে৷ সঙ্গে যে গাড়িতে করে তিনি বাড়ি ফেরেন, সেই চালককেও রাখা হয়েছে পর্যবেক্ষণে৷ রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব বিবেক কুমার জানিয়েছেন, ওই তরুণের আবাসন থেকে নবান্ন, এমনকি বাঙুর হাসপাতালেও যাদের সংশ্পর্শে এসেছিলেন তাদের সঙ্গে যোযোগ করা হচ্ছে। এছাড়া যে বিমানে তিনি এসেছেন, সেই বিমানের সহযাত্রীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে। কন্ট্র্যাক্ট ট্রেসিংয়ের মাধ্যমে এঁদের প্রত্যেককে হাসপাতালে, অথবা বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, ইংল্যান্ডে থাকাকালীন ওই যুবক তাঁর এক বান্ধবীর সঙ্গে একটি পার্টিতে যান৷ সেখানে উপস্থিত অনেকের শরীরেই মিলেছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ৷ এমনকি তার বান্ধবীও করোনায় আক্রান্ত৷ ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে করোনা সন্দেহে নজরদারিতে রয়েছেন ১২,২২৬ জন। তবে সরকারি নির্দেশিকা ও সমস্তরকম ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও বিদেশ ফেরত ওই তরুণকে কেন সরাসরি আইডি হাসপাতালে পাঠানো যায়নি, সেবিষয়ে সরকারের তরফে খোঁজখবর শুরু হয়েছে।