কলকাতা: করোনা গুজবে দিশেহারা বাংলার বাজার৷ পুলিশ প্রশাসনের তরফে বারবার সতর্ক করা হয়েছে৷ তা সত্ত্বেও বন্ধ হচ্ছে গুজব৷ করোনা আতঙ্কে দোকান-বাজার বন্ধ হওয়ার গুজবে এবার মাথায় হাত আম জনতার৷ পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে গুজবের বিরুদ্ধে পুলিশকে কড়া ভাষায় বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
আজ নবান্নে করোনা রুখতে জরুরি বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ গুজব রুখতে পুলিশকে কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়ারও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বলেন, ‘‘অনেকে হোডিং দিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে৷ যারা গুজব রটাবেন, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা করবে৷ কিন্তু পুলিশকে দেখতে হবে কাউকে যেন পুলিশ অহেতু হেনস্থা না করে৷ ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই৷ বাজার চলবে৷ দোকান চলবে৷ খাদ্যপণ্যের কোন অভাব নেই৷ আপনাদের কোন ভয় নেই৷’’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্যে স্কুল-কলেজ ছুটি দেয়া হয়েছে শিশুদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে৷ আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অনেকে গুজব ছড়ানোর জন্য হোডিং দিচ্ছে৷ বাজার বন্ধ করার কথা বলছে৷ গুজব রটাচ্ছে৷ এই সমস্ত চববে না৷’’ এদিন পুলিশকে কড়া ভাষায় গুজবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বর্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ পরিষেবা দেওয়ার জন্য পুলিশকে ২৪ ঘন্টা ডিউটি দেওয়ার বিষয়ে জানান তিনি৷ পরিস্থিতি দেখে প্রশাসনিক কর্তাদের সর্বক্ষণ পরিষেবা দেওয়ার আর্জি জানান তিনি৷
অন্যদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানো নিয়ে ইতিমধ্যেই শহরবাসীকে সতর্ক করেছেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা৷ গুজব ছড়ানোর অভিযোগ প্রমাণ হলে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়েই রাজ্যে ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে গুজবের হাওয়া৷ করোনা আতঙ্কে বাজারের ঝাঁপ বন্ধ হওয়ার উড়ো খবরে দিশেহারা মানুষ৷ ঘরে খাদ্য সামগ্রী মজুত করতে বাজারে নেমেছে মানুষের ঢল৷ যার জেরে তৈরি হয়েছে একটা কৃত্রিম সংকট৷ যা সামাল দেওয়া দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ যে পরিবারের পাঁচ কেজি আলুতে সপ্তাহ চলত, তাঁরা এখন ১৫ কেজি আলু মজুত করছে৷ তালিকায় রয়েছে চাল, ডাল, আটা, তেল, চিনি৷ এই চাহিদার জেরেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে জিনিসের দাম৷ সবজি বাজারে আগুন৷ মাছের দাম আকাশ ছোঁয়া৷ লাগাম ছাড়া খাসির মাংস৷ যারা জেরে নাজেহাল ক্রেতারা৷
করোনা ভাইরাসের জের শুধু মানুষের জীবনেই পড়েনি পড়েছে সাধারণ জীবনযাত্রা থেকে বিশ্ব অর্থনীতিতে। করোনার প্রভাব পড়েছে প্রতিদিনের বাজার দরের ওপর। এর উপর গুজবের হাওয়া ঘৃতাহুতি দিচ্ছে বর্ধিত বাজার দরে৷ এই গুজব রুখতে পুলিশ কেন কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে না, বিভিন্ন মহলে সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ যদিও লালবাজার সূত্রে খবর, এই বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে৷ গুজব ছড়ালে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার৷ তবে ক্রেতাদের একাংশের অভিযোগ, করোনাভাইরাস ঘিরে জল্পনার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী পরিকল্পিত ভাবে জিনিসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন৷ কিন্তু অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি রুখতে প্রশাসন নির্বিকার৷ বাজার বন্ধ হওয়ার গুজবে এবার ব্যহত সাধারণ জনজীবন৷