প্রয়াত পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়, ভারতীয় ফুটবলে এক যুগের অবসান

প্রয়াত পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়, ভারতীয় ফুটবলে এক যুগের অবসান

কলকাতা: প্রয়াত ভারতীয় ফুটবলার পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর৷ পিকের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বাংলার ফুটবল মহল৷ বয়সের ভারে স্নায়ূর সমস্যা দিয়েছিল তাঁর৷ গত ২১ জানুয়ারি তাঁর শারীরিক সমস্যা বাড়ে৷ ভর্তি হল হাসপাতালে৷ দিনে দিনে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটতে থাকে৷ রাখা হয় ভেন্টিলেশনে৷ লড়াই চালাচ্ছিন চিকিৎসকরা৷ কিন্তু, সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে তাঁর মৃত্যুর খবর ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা৷

নাম: প্রদীপকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়

জন্ম: ২৩ জুন, ১৯৩৬

উচ্চতা: ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি

পজিশন: স্ট্রাইকার

প্রদীপ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়৷ পিকে বন্দ্যোপাধ্যায় নামেই যিনি পরিচিত। এই প্রাক্তন ভারতীয় ফুটবলারের জন্ম জলপাইগুড়িতে। স্ট্রাইকার হিসেবে ফুটবল কেরিয়ারে করেছেন ৬৫টি গোল। তবে ১৫ বছর বয়সে বিহারের হয়ে যখন সন্তোষ ট্রফি খেলতে শুরু করেন, তখন তাঁর পজিশন ছিল রাইট উইং।

ফুটবলার পিকে:  ১৯৫৪ সালে কলকাতার আরিয়ান ক্লাবে যোগ দেন পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে ইস্টার্ন রেলওয়ে অফ ইন্ডিয়াকেও প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি। ভারতের জাতীয় দলের জার্সিতে প্রথম দেখা যায় মাত্র ১৯ বছর বয়সে। ১৯৫৮ সালে টোকিও, ১৯৬২ সালে জাকার্তা এবং ১৯৬৬ সালে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসে ভারতকে প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। যার মধ্যে দ্বিতীয়টি অর্থাৎ ১৯৬২ সালে ভারত সোনাও জিতেছিল। ১৯৫৬ সালে সামার অলিম্পিক্সে জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এই বাঙালি ফুটবলার। ১৯৬০ সালের রোম অলিম্পিক্সে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ভারতের জার্সিতে তাঁর গোল আজও স্মরণীয় হয়ে আছে। তবে চোট আঘাত তাঁর ফুটবলজীবনে দুঃস্বপ্ন হয়ে ধরা দিয়েছে। জাতীয় দল থেকে ছিটকে গেছেন। শেষ পর্যন্ত ১৯৬৭ সালে ফুটবল থেকে অবসর নেন পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়।

'স্যর' পিকে:  ফুটবলার প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় মনোনিবেশ করেছিলেন কোচিংয়ে। ইস্ট বেঙ্গল ফুটবল ক্লাব থেকেই তাঁর যাত্রা শুরু। এরপর মোহনবাগান ক্লাবেও প্রশিক্ষক হিসেবে দেখা যায় তাঁকে। এক সিজনেই তিন-তিনটি শিরোপা। আইএফএ শিল্ড, রোভার্স কাপ এবং ডুরান্ড কাপ জয় করে মোহনবাগান। ১৯৭২ সালে ভারতের জাতীয় ফুটবল দলের কোচ হিসেবে যোগ দেন পিকে। ১৯৭২ সালে মিউনিখ অলিম্পিক্স কোয়ালিফাইং ম্যাচে জাতীয় দলের গাইড ছিলেন তিনিই। ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলের কোচ হিসেবে দেখা গেছে তাঁকে।

সম্মান:  ১৯৬১ সালে অর্জুন পুরস্কার, ১৯৯০ সালে পদ্মশ্রী ছাড়াও  ২০০৪ সালে প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'অর্ডার অফ মেরিট' প্রদান করে ফিফা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *