কলকাতা: করোনা সংক্রমণের জেরে মার খেয়েছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের রুজি রোজগার। তাদের স্বস্তি দিতে একসঙ্গে ছ'মাসের রেশন দেওয়ার ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। এবার রাজ্য সরকারও দরিদ্র মানুষকে ছ'মাস বিনামূল্যে চাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন,'রেশন দোকান থেকে ৭ কোটি ৮৫ লক্ষ মানুষকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বিনামূল্যে চাল দেওয়া হবে। ২ টাকা কেজি দরে মাসে ৫ কেজি করে ব্যক্তি পিছু চাল পাওয়া যায় রেশন দোকান থেকে। সেই চালটাই এবার বিনামূল্যে দেওয়া হবে।'
করোনার প্রকোপের জেরে আমজনতার মনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। রাস্তাঘাটের অবস্থা দেখেই তা স্পষ্ট হচ্ছে। ফলে যাঁরা দৈনন্দিন আয়ের উপর নির্ভর করে সংসার চালায়, তাঁদের আয়ে প্রভাব পড়ছে। সেজন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । দিন দুয়েক আগেই সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে ৬ মাসের রেশন একসঙ্গে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী রামবিলাস পাসওয়ান।দেশের ৭৫ কোটি মানুষ গণবণ্টন সিস্টেমের আওতায় পড়েন। এবার থেকে চাইলে তাঁরা ৬ মাসের খাদ্যশস্য একসঙ্গে তুলে নিতে পারবেন। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারগুলির কাছেও নির্দেশ পাঠানো হচ্ছে।
পাশাপাশি আগামী সোমবার থেকে রাজ্য সরকারি অফিসগুলোতে অর্ধেক হাজিরা চালু হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। অর্থাৎ প্রতি সপ্তাহে সব দপ্তরের ৫০ শতাংশ কর্মীকে ক্রমান্বয়ে দপ্তরে আসা ও বাকি অর্ধেকের বাড়িতে থেকে কাজ করার প্রক্রিয়া চালু হবে। ই অফিস সিস্টেম কাজে লাগিয়ে কর্মীরা যাতে বাড়ি বসেও কাজ চালিয়ে যেতে পারেন, তা দেখা হচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান।৩১ মার্চ পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া আপাতত চালানোর পর পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী বেসরকারি সংস্থাগুলোর প্রধানদের কাছেও অন্তত ৫০ শতাংশ কর্মীকে বাড়িতে রাখার পরামর্শ দেন। প্রয়োজনে কাজের সময় কাটছাঁটের কথাও ভাবার আবেদন জানান তিনি।
অন্যদিকে, রোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্যে অপৎকালীন ত্রাণ তহবিল তৈরি করা হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন । সাধারণ মানুষও এই তহবিলে আর্থিক সহায়তা করতে পারবেন। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি অভিযোগ করেন করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রের কাছ থেকে কোন রকম অর্থ সাহায্য মেলেনি। তাই সোমবার থেকে রাজ্য সরকার নিজেই এই তহবিল চালু করবে।একই সঙ্গে যে সমস্ত কর্মী এই করোনা পরিস্থিতিতে প্রাণপণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, সেই স্বাস্থ্যকর্মী, ডাক্তার, পুলিশ, সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি পুজোর পর তাদের নিয়ে অতিরিক্ত ছুটির বিষয়ে দেখা হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।