কলকাতা: কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ফের উত্তেজনা। করোনা সতর্কতায় অসন্তুষ্ট কয়েদিরা গতকালই তাণ্ডব চালিয়েছিল জেলের মধ্যে। সংঘর্ষে মৃত্যুর খবরও এসেছে। রবিবার একই উত্তেজনার ছবি ধরা পড়ল জেলের মধ্যে। রক্ষীদের মারধোর করে মহিলা কয়েদিদের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়ল পুরুষ কয়েদিরা। এমনকী সূত্রের খবর, জেলের আগুন লাগানোরও চেষ্টা করেছে বন্দিরা।
কাল থেকেই উত্তপ্ত ছিল দমদম সেন্ট্রাল জেল। সেই পরিস্থিতিতে রবিবার সকাল থেকেই অশান্তি জের দেখা যায় সংশোধনাগারে। পরবর্তীতে তা ভয়াবহ আকার নেয়। পুরুষ কয়েদিরা মহিলা ওয়ার্ডের রক্ষীদের মারধোর করে। রক্ষীদের গলার সোনার চেনও ছিনতাই করার চেষ্টা করে বন্দিরা। এক মহিলা রক্ষী অভিযোগ করেছেন, তাঁকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গিয়েছিল বন্দিরা। তারপর ওই পুরুষ কয়েদিরা মহিলা কয়েদিদের ওয়ার্ডে ঢোকে। আতঙ্কে রয়েছেন জাতীয় সংশোধনাগারের রক্ষীরা। ঘটনাস্থলে পুলিশবাহিনী পৌঁছলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসা পরিস্থিতি। সূত্রের খবর, কয়েদিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দু'টি আগ্নেয়াস্ত্রও। জেলের বন্দি আসামিদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র কীভাবে পৌঁছল, তা নিয়ে কাল থেকেই চলছে জল্পনা।
গতকাল দমদম জেলে গুলিতে বন্দি মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে এস ইউ সি আই(সি) দলের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘গতকাল দমদম জেলে বন্দীদের উপর গুলি চালানোর ঘটনা ও তার ফলে এক বন্দীর মৃত্যু এই রাজ্যে কারাগুলির চরম অব্যবস্থা ও বন্দীদের প্রতি সরকারের নগ্ন অবহেলার নিদর্শন ছাড়া আর কিছু নয়। কারাগারগুলিতে বন্দীদের জন্য ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধার অভাব যেমন আছে, অন্যদিকে ঘুষের বিনিময়ে নানা বেআইনি সুবিধা প্রাপ্তিরও সুযোগ আছে যার সংগে কারাবিভাগের নানা স্তরের অফিসার যুক্ত। এই সমস্যার সংগে যুক্ত হয়েছে করোনা জনিত কারণে কোর্ট বন্ধ থাকায় জামিন না পাওয়ার ফলে তাদের অসহয়তা, প্যারোল দেওয়ার ক্ষেত্রে বন্দীদের মধ্যে তারতম্য করা ইত্যাদি। উল্লেখযোগ্য এই রাজ্যের কারা আইনে একজন সাজাপ্রাপ্ত বন্দীর সারাজীবন মাত্র ৫দিন প্যারোল পাওয়ার মত অদ্ভুত নিয়ম আছে যা আর কোন রাজ্যে নেই। এসব কারণেই বারুইপুর জেলে কিছুদিন আগে বন্দী অসন্তোষ ও তাদের উপর অমানবিক নির্যাতন ঘটেছিল। আমরা বন্দি মৃত্যুর ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি এবং কারাগারের মধ্যে তাঁদের করোনা জনিত সুরক্ষার ব্যবস্থা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা সহ কারা আইনের সংশোধনের দাবি করছি৷’’