কলকাতা: লকডাউনের নামে পুলিশি তাণ্ডবের বিরুদ্ধে এবার সরাসরি মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে পুলিশের বিরুদ্ধে চড়া সুরে বার্তা দিয়েছেন তিনি৷ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে গেলে বা বিক্রি করতে যাওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ বাধা দেবে না৷ এই কাজে প্রশাসনিক কর্তাদের দায়িত্ব নিতে হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তবে, ভিড় এড়াতে ও দোকান খোলা রাখার বিষয়েও বেশ কিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷
নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘একটু দূরত্ব বজায় রেখে চলুন৷ দোকান বাজারে যারা যাবেন, দূরে দূরে লাইন করে দাঁড়ান৷’’ এদিন পুলিশকে চরম বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘হোম ডেলিভারি ক্ষেত্রে কোন বাধা দেয়া যাবে না৷ অত্যাবশ্যকীয় পণ্যকে অগ্রাধিকার দিতে হবে৷ কোনভাবেই সেগুলি আটকাবেন না৷ অনেক সময় ওসিরা দায়িত্ব দিয়ে দেয়, কিছু সিভিক, হোমগার্ডদের৷ বেচারা ওরা জানেনা খবরটা৷ ফলে কী হয়, তাঁরা সবাইকেই এক কারাগারে বন্দি করে৷ এটা ঠিক নয়৷ সরাসরি দায়িত্ব নিতে হবে আইসিদের৷ দায়িত্ব নিতে হবে ডিএমদের৷ দায়িত্ব নিতে হবে বিডিওদের৷ দায়িত্ব নিতে হবে প্রাশনকে৷ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেউ যেন না আটকায়৷ হোম ডেলিভারি আটকানো যাবে না৷ কৃষকদের আটকানো যাবে না৷ জেলায় জেলাভিত্তিক পুলিশ একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন৷’’
নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, করোনা রুখতে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং মেনে চলতেই হবে৷ সোশ্যাল ডিসট্যন্সিং মানে আইসোলেট করে দেওয়া নয় বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ অযথা আতঙ্কিত না হয়ে জিনিস মজুত না করাও বার্তাও দিয়েছেন মমতা৷ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের জোগানে যাতে কোনও প্রভাব না পড়ে, তা নিশ্চিত করতেও প্রশাসনকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারকদের দায়িত্ব নিয়ে কাজ করাও বার্তা দেন৷ কোনও ভাবেই জরুরি পরিষেবা আটকানো যাবে না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ পুলিশের মধ্যে সমন্বর বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি সিভিক ও হোমগার্ডদের ‘অজ্ঞতা’ নিয়েও প্রশ্নও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ কয়েকজন পুলিশকর্মীর ‘অজ্ঞতা’র কারণে আটকে দিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন মমতা৷ সব্জিওয়ালা, কৃষকদের আটকানো যাবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি৷ তবে, একসঙ্গে জমায়েত না করার বিষয়েও সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷