দিল্লি থেকে তেহট্ট, বিয়ের অনুষ্ঠান! আক্রান্ত পরিবারের সংস্পর্শে কত? বাড়ছে গভীর উদ্বেগ

দিল্লি থেকে তেহট্ট, বিয়ের অনুষ্ঠান! আক্রান্ত পরিবারের সংস্পর্শে কত? বাড়ছে গভীর উদ্বেগ

d0fe0583de1e6bf9f5a15c7c93e1b6da

 

কলকাতা: দিল্লি ফেরত করোনা আক্রান্ত একই পরিবারের ৫ সদস্যকে অবশেষে ভর্তি করা হল বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে৷ আজ সকালে পুলিশি নজরদারিতে আক্রান্ত ওই পাঁচজনকে বিশেষ অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়৷ একই সঙ্গেও আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা আরও বেশ কয়েকজনকে সরকারি করোনা কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে৷ একই সঙ্গে করোনা আক্রান্ত ওই পরিবারের সংস্পর্শে আসা রাজধানী এক্সপ্রেস ও লালগোলা প্যাসেঞ্জারের যাত্রীদের খোঁজ করতে গিয়ে বিপাকে রেল ও স্বাস্থ্য দপ্তর৷ ইতিমধ্যেই ২০ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে৷

সূত্রের খবর ওই পরিবারের করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার পর থেকেই তাঁরা কাদের সঙ্গে মেলামেশা করেছিলেন, কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, তা চিহ্নিত করার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করেছে প্রশাসন৷ আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলে সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে৷ তবে স্বস্তির খবর, রাজ্যে করোনা আক্রান্ত একই পরিবারের পাঁচ সদস্য নদিয়ার তেহট্টের বাসিন্দা নন৷ তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর৷ সাংবাদিক বৈঠক করে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, করোনা আক্রান্ত পাঁচ জনের মধ্যে ২ জন দিল্লি, ৩ জন উত্তরাখন্ড থেকে তেহট্টের বাসিন্দা জনৈক মণ্ডল পরিবারের বিয়ের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিল৷ আর সেখানেই ঘটে বিপত্তি৷

জানা গিয়েছে, দিল্লি থেকে ফেরার সময় ওই পরিবারটি রাজধানী এক্সপ্রেসের সংরক্ষিত কামরায় ছিলেন৷ কিন্তু সেখান থেকে তাঁরা শিয়ালদা স্টেশনে নামেন৷ ভিড়েঠাসা শিয়ালদহ স্টেশন থেকে যাত্রীবোঝাই লালগোলা প্যাসেঞ্জারের সাধারণ কামরায় ওঠেন আক্রান্ত পরিবার৷ গত ১৬ মার্চ দেরাদুন থেকে দিল্লি আসেন তেহট্টর ওই পরিবারের ২৭ বছরের এক মহিলা৷ মহিলার সঙ্গে ছিলেন তাঁর ন'মাস ও ছয় বছরের ২ শিশু৷ যান বিয়ে বাড়িতে৷ ফলে সেখানেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার প্রবল আশঙ্কা তৈরি হয়েছে৷ যেহেতু ওই পরিবারটি সংরক্ষিত কামরায় দিল্লি থেকে কলকাতায় ফেলেন, ফলে ওই ট্রেনের সফর করা আশেপাশের যাত্রীদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে৷ সংরক্ষিত কামরায় থাকা বেশ কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের সতর্ক করা হয়েছে৷ তবে লালগোলা প্যাসেঞ্জারের সাধারণ যাত্রী কামরায় ওই পরিবারের সংস্পর্শ কতজন যাত্রী এসেছেন, তা চিহ্নিত করার কাজ খুব একটা সহজ হবে না বলে মনে করা হচ্ছে৷ কারণ সাধারন কামরায় যাত্রীদের পরিচয় বা কোন তথ্য থাকে না ফলে রেলের কাছে৷ সে ক্ষেত্রে কীভাবে তাদেরকে চিহ্নিত করা যাবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য স্বস্থ্য দপ্তর৷

জানা গিছে, গত ১৯ মার্চ দিল্লি-শিয়ালদা রাজধানীতে ওঠেন ওই পরিবারের ৮ জন৷ ২০ মার্চ সবাই নামেন শিয়ালদহ স্টেশনে৷ ওই দিন শিয়ালদহ থেকে বেথুয়াডহরি থেকে অটো ধরে তেহট্টে নামেন তাঁরা৷ তেহট্ট এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন দিল্লি থেকে আসা ২৭ বছরের মহিলা৷ পরে একই পরিবারের পাঁচ সদস্যের দেহে করোনা সন্ধান মেলে৷ সংক্রমণ ছড়িয়ে পরা রুখতে মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় মোট ১৩ জনকে৷  

ভিন রাজ্য থেকে আসা ৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়৷ তার মধ্যে ৫ জনের শরীরে পজেটিভ মিলেছে৷ আক্রান্ত ও আত্মীয়দের কলকাতায় আনা হয়েছে৷ বেলেঘাটা আইডি হাসপাতলে আক্রান্তদের ভর্তি করা হয়েছে আক্রান্তদের৷ বাকি সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের সরকারি কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে৷ জানা গিয়েছে, এর আগে ১১ বছরের বালক জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দিল্লির রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতলে ভর্তি হয়৷ চিকিৎসকরা পরিবারের সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেন৷ কিন্তু, কোয়ারেন্টাইন ভেঙে দিল্লি ছাড়েন দুই পরিবারের ৫ সদস্য সহ ৮ জন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *