কলকাতা: করোনা চিকিৎসায় বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও গাফিলতি অভিযোগ এনেছেন হুগলির সাংসদ লকেট চ্যাটার্জি। নিজের ফেসবুক পেজে তিনি যে অভিযোগ এনেছেন তা এক কথায় মারাত্মক।
ঘটনা, হুগলি লোকসভার ধনেখালী এলাকার। যদিও তিনি অভিযোগে নিজের সন্দেহের কথা জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগের বাস্তব ভিত্তি তিনি প্রমাণ করার জন্য সাংসদ হিসাবে কী করবেন, তা ওই ফেসবুক পোস্টে জানাননি। শুধু লকেট চাটার্জিই নন, রাজ্য বিজেপি'র অনেক নেতাই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে রাজনীতির অভিযোগ এনেছেন। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ যেমন সরাসরি অভিযোগ করেছেন, “পশ্চিমবঙ্গে ডেঙ্গু হল অজানা জ্বর, করোনা হল নিমনিয়া এবং কিডনি সমস্যা।”
রাজ্য সভাপতিকে সঙ্গত করেছেন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। তিনিও বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকার তথ্য ধামাচাপা দিচ্ছে ঠিক ডেঙ্গির মত।” রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রাজ্যে করোনার মৃতের সংখ্যা সঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিটির হিসাব কেন মিলছে না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন দিলীপ।
তিনি বলেছেন, “রাজ্য সরকার আগে বলেছে করোনার মরছে না। নিমুনিয়া, হৃদরোগে মরছে। লুকানো হচ্ছে। সরকার তিন বলেছিল। সাত হয়ে গিয়েছে।” যদিও রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা বলেছেন, কিছু মানুষ কো-মর্বিডিটি বা কিছু বাড়তি মরণ উপসর্গ নিয়ে ভর্তি ছিলেন। এমন চার জন মারা গিয়েছেন। যাদের মৃত্যুকে করোনার মৃত্যু বলা যাবে না।”
অন্যদিকে, লকেট চ্যাটার্জি ফেসবুকে যে পোস্ট করেছেন সেখানের তিনি লিখেছেন, “ধনেখালী থানার হাবিবপুর গ্রামে এক যুবক কিছুদিন আগে দিল্লি থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এরপর জ্বর সর্দি কাশি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে ধনেখালী হাসপাতালে ভর্তি হন ২৫ মার্চ। ওই হাসপাতাল রোগীকে করোনা সন্দেহে চুচুড়া হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু, চুচুড়া হাসপাতাল তাকে কিছু হয়নি বলে ছেড়ে দেয়। এরপর স্থানীয় ডাক্তারও করোনা সন্দেহে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু, প্রাথমিক ভাবে স্থানীয় থানা, স্বাস্থ্য কেন্দ্র কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি। পয়লা এপ্রিল ছেলেটির অবস্থা যখন খুব খারাপ তখন, পুলিশ এসে হাসপাতালে নিয়ে যায়। যদিও হাসপাতালে (কোন হাসপাতাল বলা হয়নি) বলা হয় তার করোনা হয়নি। জানান হয় ছেলেটি মারা গিয়েছে, নিমনিয়া এবং হার্টফেল করেই ওই মৃত্যু। লকেটের সন্দেহ, ২৭-২৮ বছরের ছেলের নিমনিয়া কী ভাবে হয়, তাঁর দেহটি পরীক্ষা হোক। ওই এলাকায় প্রায় ৫০০ মানুষ বাস করেন। তারা আতঙ্কিত।’’