কলকাতা: দেশ জুড়ে করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে। একদিকে যেমন সতর্কতা হিসেবে লক ডাউনের নির্দেশ অমান্যের অভিযোগ উঠছে, অন্যদিকে মানবিকতারও নমুনা মিলছে এই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। হুগলী, বর্ধমান থেকে বালিচক, ঘরবন্দি অসহায় মানুষের কাঁধে হাত রেখে 'আমরা করব জয়'-এর অঙ্গীকার দৃশ্য চাক্ষুষ করল বাংলা। কেউ একক প্রচেষ্টায়, কেউ আবার দল বেঁধে।
শুক্রবার একাই এগিয়ে এলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারী থানার মগড়া পাঁচখেয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সুপর্ণা পাল। এলাকার অসহায় মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ঐক্য মুক্তমঞ্চের সদস্য হিসেবে সরকারি বেতনভোগী কর্মচারীদের দরিদ্র মানুষদের সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসার প্রস্তাবটিকে সমর্থন করেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, 'সমাজ অসুস্থ থাকলে কাদের শিক্ষিত করব আমরা?'
লকডাউন পরিস্থিতিতে বন্ধ হয়েছে আয়ের সম্ভাবনাও। তাই বাড়ির দোরগোড়ায় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিল বাংলার নতুন জাতীয়তাবাদী সংগঠন জাতীয় বাংলা সম্মেলন। সংগঠনের হুগলী জেলার গরলগাছা ইউনিটের তরফে বাগবুল ইসলাম এবং নাদিম হোসেন মল্লিক আগামী দিনেও এভাবে সাধারণ মানুষের পাশে থাকার সংকল্প করেন এদিন। সংগঠনের তরফে জানানো হয়, দিনমজুর অসহায় মানুষের সাহায্যে সর্বদা এগিয়ে আসবে তারা।
শুধু জাতীয় বাংলা সম্মেলনই নয়, এই সঙ্কটের পরিস্থিতিতে মানবিকতার অনন্য নিদর্শন রাখল বালিচক স্টেশন উন্নয়ন কমিটিও। সদস্যরা বিভিন্ন ত্রাণ তহবিলে সাহায্যের পাশাপাশি নিজেদের উদ্যোগেই স্থানীয় এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এক লিটার সরষের তেল, এক কিলোগ্রাম মুসুর ডাল, সাড়ে তিন কিলোগ্রাম আলু, সোয়াবিন, লঙ্কা, হলুদের প্যাকেট ছাড়াও একটি করে সাবান, সার্ফ ও লবনের প্যাকেট দেওয়া হয়েছে ১০০টি বাড়িতে। প্রচার নয়, বরং প্রসারে বিশ্বাসী বালিচক স্টেশন উন্নয়ন কমিটির সদস্যরা। সভাপতি সুভাষচন্দ্র মাইতি, সম্পাদক কিংকর অধিকারী থেকে শুরু করে কমিটির সদস্য শিবু দাস স্বপ্ন দেখেন এই অন্ধকার কেটে নতুন আলো ফুটবে। সবাইকে একসঙ্গে লড়ার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ রুখতে যথাযথ নিয়ম মেনে চলার পরামর্শও দিয়েছে স্টেশন উন্নয়ন কমিটি।