কলকাতা: খাবার না থাকলে গরিব মানুষ লকডাউন মানবে না। মন্তব্য, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র'র। তিনি বলেছেন, “আপনি যত নিরাপদ জায়গাতেই থাকুন, যদি ব্যাপক মানুষের নিরাপত্তা না থাকে, তবে তারা অভুক্ত থাকলে, অনাহারে মৃত্যুর আগে লকডাউন'টা ভেঙে দেবে।”
সূর্যকান্তবাবুর মতে, “এটা বুঝতে হবে, আমি মরতে যাচ্ছি না খেতে পেয়ে, আইন আমার জন্যে? লকডাউন আমার জন্যে? নাকি যার খাবার আছে তার জন্যে? লকডাউন থাকবে না এই রকম হলে।” সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকারের বুঝতে হবে। সাড়ে সাত কোটি টন খাদ্যশস্য গুদামে পঁচছে। আপনি গুদাম ভাড়া দিচ্ছেন। ছেড়ে দিন তাকে। রেশন দোকানে লাইন দেওয়ার দরকার কী? রেশন কার্ডের দরকার কী? যে খেতে পাচ্ছে না, তাকেই দেবে। দরকার হলে আমরা স্বেচ্ছাসেবক দেব। অন্য সংস্থা দেবে। বাড়ি বাড়ি দিয়ে আসবে।”
মুম্বইয়ের বান্দ্রার শ্রমিকরা বাড়ি ফিরতে চেয়ে ভিড় জমিয়েছে। আর আগে দিল্লীতেও একই ঘটনা ঘটেছে। এই সমস্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সূর্যকান্ত'র বক্তব্য, লকডাউন সফল করতে গেলে বাড়ি বাড়ি খাদ্যের যোগান ঠিক রাখতে হবে। এটা ঠিক করোনা মোকাবিলায় বামপন্থী কেরালা যা ভূমিকা নিয়েছে, তা দেখেছে সারা দেশ। সারা বিশ্বেই তা আলোচিত হচ্ছে।
যে বিষয়টি সব থেকে বেশি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে তা হল, কেরালার সাফল্য থেকে সারা ভারত সরকার শিক্ষা নিতে পারে। কারণ, ভারতে ২১ দিন লকডাউনের পরও সংক্রমণের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। লকডাউন ৩ মে পর্যন্ত বাড়ান হয়েছে। কেরালা সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপ, পরীক্ষা ব্যবস্থা এবং সামাজিক বণ্টন ব্যবস্থা যেমন গরীবদের জন্য খাদ্য ও বাসস্থানের ব্যবস্থা সারা ভারতের মডেল হতে পারে। কেরালার স্বাস্থ্য মন্ত্রী কে কে সাইলাজা সারা ভারতের আলোচিত বাক্তিত্ব। তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, কেরালা ভাল কিছু করার আশা করেই লড়াইয়ে নেমেছে।
কিন্তু, খারাপের জন্য প্রস্তুত আছে। এই রোগের দ্বিতীয় আক্রমণ আসতেই পারে। ভারতের ৬টি রাজ্যকে পরামর্শও দিচ্ছে কেরালা। দেরিতে হলেও কেন্দ্রীয় সড়কার বুঝতে শুরু করেছে, দেশের গরিব জনতার ঘরে খাবার না পৌঁছালে লকডাউন ধরে রাখা সম্ভব নয়। পশ্চিমবঙ্গে, রেশন দোকানে লাইন দেখে মনে হয়না লকডাউন চলছে। কেরালা সরকারের বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়ার ধারণাকে এখনও মেনে নিতে পারেনি রাজ্য সরকার।