কলকাতা: দেশের পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে রাজ্যেও বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বুধবার নতুন করে বাংলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩২ জন। সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে রাজ্যের হাসপাতলে করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ৩০০ জন। নতুন করে কোনও মৃত্যুর খবর নেই। বুধবার নবান্ন থেকে এই তথ্যই প্রকাশ করলেন মুখ্য সচিব রাজীব সিনহা।
নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব জানান, নতুন করে কোনও মৃত্যু হয়নি৷ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ১৫ জন৷ ৩০০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন হাসপাতলে। করোনাকে জয় করে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৭৯ জন৷ ইতিমধ্যেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে হাসপাতাল থেকে। গোটা পরিস্থিতি সামাল দিতে সব রকম পদক্ষেপ নিচ্ছে রাজ্য সরকার। চিকিৎসা ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতে কোনরকম সমস্যা না হয় তার জন্য ৭ লক্ষ ২০ হাজার N95 মাস্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও মুখ্য সচিব জানান, গোটা রাজ্যে এখনও পর্যন্ত করোনা টেস্ট করা হয়েছে ৭ হাজার ৩৭ জনের। যদিও কিছু কিছু জায়গায় টেস্ট হচ্ছে না বলে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে। সেটা অসত্য বলে এদিন দাবি করেন মুখ্য সচিব। বুধবার একদিনে ৮৮৫ টি কোন পরীক্ষা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। রাজ্যে বিগত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩২ জন নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন৷
এদিকে সঙ্গলবারের পরেও করোনা নিয়ে সচেতনতা প্রচার করতে পথে নামেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন থেকে বেরিয়ে খিদিরপুর এলাকায় হাজির হন তিনি। সঙ্গে ছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। গাড়িতে বসেই মাইকে সচেতনতার বার্তা দেন মমতা। এলাকাবাসীর কাছে তাঁর আবেদন, ‘বাড়ির বাইরে বের হবেন না। বাড়িতে বসেই করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হতে হবে।’ একইসঙ্গে মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহারের উপর জোর দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘বাইরে একান্ত বেরতে হলে মাস্কে মুখ ঢেকে বের হন। বারবার সাবান জল বা স্যানিটাইজারে হাত ধুন। রাস্তায় বের হলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন।’ তবে মুখ্যমন্ত্রী কথায়, ‘রোগ রুখতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন, কিন্তু মানসিকভাবে সকলের পাশে থাকুন।’ তিনি পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, ‘সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কলকাতা পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ. সিভিক পুলিশরা কাজ করছেন। হাসপাতালে যাওয়ার হলে পুলিশকে বলুন।’
একদিন পরেই রমজান মাস শুরু। মুসলিমদের পবিত্র অনুষ্ঠান। তবে সেই অনুষ্ঠানও বাড়িতে বসে পালনের আরজি জানান মমতা। তাঁর কথায়, এই লড়াইয়ে জয়ী হলে তখন সকলে মিলে একসঙ্গে উৎসব পালন করা যাবে। এদিনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গাড়িতে বসে মাস্কে মুখ ঢেকেই সচেতনতার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই খিদিরপুর এলাকায় নিয়মবিধি না মানার অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি৷ এদিন মুখ্যমন্ত্রীর পরিদর্শনের পর বিরোধীদের কটাক্ষ, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের চাপেই তিনি এই এলাকায় পরিদর্শনে এসেছেন৷