চুঁচুড়া: সরকারি আশ্বাসে অবশেষে উঠল ১০০ ঘণ্টার অবস্থান বিক্ষোভ৷ রেশন কার্ড দুর্নীতি বন্ধ এবং ১০০ দিনের কাজের দাবিতে হুগলীর জয়হরিপুরে ১০০ ঘণ্টার অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছিল সারা বাংলা আদিবাসী অধিকার ও বিকাশ মঞ্চ।
এই আন্দোলনে যোগ দেন পার্শ্ববর্তী আকিলপুর, পুটি গেরিয়া, মুড়ি গেরিয়া, বুরুনান পাড়ার বহু মানুষ৷ অভিযোগ, দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে রেশন পাচ্ছিলেন না তাঁরা৷ লকডাউনের জেরে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে৷ বিষয়টি স্থানীয় ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকের (বিডিও) কাছে লিখিত ভাবে জানালেও, ফল মেলেনি৷ অবশেষ আন্দোলনের পথে সামিল হন তাঁরা৷
সংগঠনের সদস্য সজল দে জানান, আকিলপুর গ্রামের যে পাঁচটি পরিবার অবস্থান বিক্ষোভে বসেছিল, শুক্রবার সকালে তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান৷ তিনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও নিয়ে গিয়েছেন৷ আগামী দুই দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি৷ কিন্তু সংগঠনের পক্ষ থেকে তাঁকে আরও একদিন বাড়তি সময় দেওয়া হয়েছে৷ বলা হয়েছে, এই তিন দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে ফের শুরু হবে অবস্থান বিক্ষোভ৷
এছাড়াও পোলবা দাদপুর ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে রেশন কার্ডে না থাকা হাজার মানুষের নাম জমা দেওয়া হয়েছিল৷ এদিন সেই বিষয়েও আদিবাসী অধিকার ও বিকাশ মঞ্চের রাজ্য প্রেসিডেন্ট সজল অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেন এসডিও৷ নামের তালিকা চেয়ে পাঠান তিনি৷ এর পরেই অবস্থানে বসা প্রতিটি মানুষের নাম ইমেল মারফত চুঁচুড়া এসডিও অফিসে পাঠানো হয়৷ তবে তিন-চার দিনের সমস্যার সমাধান না হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলন হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা৷
সজল দে জানান, তাঁর সঙ্গে এই অবস্থান বিক্ষোভে বসেছিলেন মানস ভট্টাচার্য৷ দু’দিন আগে ডিএম অফিস থেকে ফোন করে তাঁকে প্রধানের সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়েছিল৷ কিন্তু প্রধান কোনও কথার গুরুত্ব দেননি৷ পরে ফের অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হন তিনি৷ ডিএমকে’ও বিষয়টি জানানো হয়৷ এরপরই প্রধান নিজে এসে দেখা করেন এবং মানসবাবুর বাড়িতে গিয়ে তাঁর মেয়ের জন্য দুধের ব্যবস্থা করেন৷ পৌঁছে দেন খাদ্য সামগ্রা৷
সজল দে জানান, তাঁদের দাবি ছিল, ১০০ দিনের কাজ অবিলম্বে চালু করতে হবে এবং রেশন কার্ড নিয়ে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। সমস্ত মানুষের রেশন সুনিশ্চিত করতে গ্রামভিত্তিক কার্ডের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। নির্বাচন পরিচয় পত্রের তালিকা যেমন গ্রাম ও বুথভিত্তিক থাকে, তেমনই রেশন কার্ডের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। এর ফলে একদিকে দুর্নীতি বন্ধ হবে, পাশাপাশি সমস্ত মানুষের রেশনের ব্যবস্থাও সুনিশ্চিত করা যাবে। আকিলপুর গ্রামে ১০০ দিনের কাজের উদ্যোগ শুরু হয়েছে৷ নাম সংগ্রহ শুরু হয়েছে৷ গ্রাম ভিত্তিক রেশন কার্ডের তালিকাও অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে৷