কলকাতা: সরকারের বিরুদ্ধে টেট দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফের সোচ্চার টেট উত্তীর্ণ চাকরি প্রার্থীরা৷ চাকরির নিয়োগে কারচুপির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন তাঁরা৷
অভিযোগ, ২০১৫ সালের টেট বিজ্ঞপ্তিতে প্রায় ৪৩ হাজার শূন্যপদ ঘোষণা করা হয়েছিল৷ পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছিল, ৪ থেকে ৫টি তালিকা প্রকাশ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে! কিন্তু আদতে তা হয়নি৷ কোনও প্যানেল প্রকাশ করেনি পর্যদ৷ বিক্ষুব্ধ প্রার্থীদের দাবি, দুটি পর্যায়ে এসএমএসের মাধ্যমে কিছু প্রার্থীকে চাকরি দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু কতজন চাকরি পেলেন, তাঁর কোনও সঠিক হিসেব নেই৷
চাকরিপ্রার্থীদের আশঙ্কা, দু’টি ধাপে মাত্র ২৫ থেকে ২৭ হাজার প্রার্থীকে চাকরি দেওয়া হয়েছে৷ বাকি পদ ফাঁকা পড়ে থাকা সত্ত্বেও ৪৩ হাজার শূন্যপদ পূরণ হয়ে গিয়েছে বলে মিথ্যা বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে৷ চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে তাঁরা প্রতারণার অভিযোগ এনেছেন৷
পূর্ববর্তী টেট আন্দোলন এবং চাকরি না পাওয়া প্রশিক্ষিত টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের সংগঠক শঙ্কর প্রসাদ খাঁ আক্ষেপ করে বলেন, ‘‘বেকারদের নিয়ে রাজ্য সরকারের ভূমিকা খুবই হতাশাজনক৷ সরকার বেকারদের প্রতি বিন্দুমাত্র সহানুভূতিশীল নয়৷ নিজেদের গদি বাঁচাতেই ব্যস্ত তাঁরা৷ ক্লাবগুলোকে লক্ষ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে৷ চাকরিজীবিদের বোনাস বাড়ানো হচ্ছে৷ অথচ প্রাথমিকে টেট পাশ করে এবং প্রশিক্ষণ নিয়েও বেকারত্বের জ্বালায় জ্বলছে হাজার হাজার প্রার্থী৷ প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরেও কোনও ফল মেলেনি৷ এই বেকার যুবকদের নিয়ে সরকারের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই৷”
অপর এক টেট উত্তীর্ণ প্রার্থী স্বদেশ ঘোষ বলেন, ‘‘শিক্ষমন্ত্রী জানিয়েছিলেন প্রশিক্ষিত প্রার্থী এবং প্রশিক্ষণরত প্রর্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে৷ সেই সময়ে ২০১৪-২০১৬ এবং ২০১৫-২০১৭ এই দুটি ব্যাচই প্রশিক্ষণরত অবস্থায় ছিল৷ কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি রাখেনি সরকার৷ প্রশিক্ষণরতদের সুযোগ না দিয়ে নিয়োগ করা হয় অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীদের৷ পরবর্তীকালে বিজ্ঞপ্তি জারি করে ২০১৪-২০১৬ ব্যাচ ও RC৷ স্বীকৃত ২০১৫-২০১৭ ডিএড ব্যাচকে নিয়োগ পর্বের আওতায় আনা হলেও, সরকার তাঁদের বঞ্চিত করে৷’’ অভিযোগ, ২০১৫-১৭ শিক্ষাবর্ষে বাইরের বোর্ড থেকে ট্রেনিং নেওয়া প্রার্থীদের চাকরি দিয়েছে পর্ষদ৷ অথচ নিজের বোর্ডের প্রার্থীদের সুযোগ দেওয়া হয়নি৷ পর্যদের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা৷ ২০১৫-১৭ ব্যাচ ছাড়াও পরবর্তী ব্যাচগুলিও (১৬-১৮ ও ১৭-১৯) ইতিমধ্যে চাকরির দাবিতে সোচ্চার হয়েছে৷