কলকাতা: মাধ্যমিক পরীক্ষার খাতা দেখা নিয়ে তৈরি হয়েছে চরম বিভ্রান্তি৷ মধ্যশিক্ষা পর্যদের লিখিত বিবৃতি আর প্রধান পরীক্ষকদের মৌখিক নির্দেশে টানাপোড়েনে পরীক্ষকরা৷ একদিকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে লকডাউনে খাতা জমা স্থগিত রাখা হবে৷ অন্যদিকে প্রধান পরীক্ষকদের অভিযোগ, লকডাউন এবং রেড জোন থাকা সত্ত্বেও পরীক্ষকদরে কাছ থেকে খাতা চাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন পর্ষদেরই আধিকারিকরা৷
গত ২২ মার্চ সংসদের ওয়েবসাইটে একটি বিবৃতিতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ছিলেন, করোনা প্যানডেমিকে আপাতত প্রধান পরীক্ষক ও বোর্ডের কাছে মাধ্যমিকের খাতা ও নম্বর জমা দিতে হবে না৷ এর পর ১৩ এপ্রিল আরও একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়৷ সেখানে বলা হয়, যে সকল পরীক্ষকদের কাছে মাধ্যমিকের খাতা আছে, তাঁরা যেন সেগুলি অন্তত দু'বার রিভিশন-সহ চূড়ান্ত ভাবে দেখে রাখেন৷ মার্কস ফয়েলে নম্বর বসিয়েও প্রস্তুত থাকতে হবে। যাতে লকডাউন মিটলেই পর্ষদ চাওয়া মাত্র নির্ভুল খাতা ও মার্কস ফয়েল তাঁরা জমা দিতে পারেন। পরবর্তী নির্দেশের জন্য ওয়েবসাইটে চোখ রাখুন।
এর পর লিখিতভাবে আর কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি৷ কিন্তু বুধবার সন্ধ্যায় কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রধান পরীক্ষকদের সকল পরীক্ষকের কাছ থেকে খাতা তুলে নিতে বলা হয়েছে। আর কতদিন ১০ লাখেরও বেশি পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিয়তায় থাকবে? তাদের স্বার্থের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।' দেশডুড়ে লকডাউন চলছে৷ তদুপরি কলকাতা এবং শহরতলির বিভিন্ন এলাকা রেড জোনে রয়েছে৷ এরই মধ্যে সোমবার থেকে পর্ষদের অফিসাররা প্রধান পরীক্ষকদের ফোন করে সকল পরীক্ষকের কাছ থেকে খাতা ও মার্কস ফয়েল চেয়ে পাঠানোর জন্য আর্জি জানান। এর পর লিখিত বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই প্রধান পরীক্ষকরা সকল পরীক্ষককে বাড়িতে এসে খাতা জমার নির্দেশ দিতে শুরু করেন।
পরীক্ষকদের অভিযোগ, খাতা জমা দেওয়ার কোনও লিখিত বিজ্ঞপ্তিও নেই। এই অবস্থায় রাস্তায় বেরলেও পুলিশি হেনস্থার মুখে পড়তে হবে৷ পর্যদের এই নির্দেশে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ পরীক্ষকরা৷ তাঁগের বক্তব্য, রেড জোনের মধ্যে বহু এলাকা কনটেনমেন্ট জোনে পড়েছে। সেখানে সবকিছু বন্ধ রয়েছে৷ প্রধান পরীক্ষক এবং পরীক্ষকদের বাড়ির মধ্যেও বিস্তর দূরত্ব রয়েছে৷ এই অবস্থায় কী ভাবে খাতা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব? প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা৷